সেই নবজাতককে দত্তক পেলেন শিক্ষক দম্পতি
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা সেই নবজাতককে দত্তক পেলেন এক শিক্ষক দম্পতি। আজ সোমবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এই নির্দেশ দেন।
আদালত শিশুটিকে ওই শিক্ষক দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও পৌঁছেছে দত্তকগ্রহীতা ওই শিক্ষক দম্পতির হাতে। তাঁরা হলেন তালা উপজেলার রাঢ়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিখা রাণী চৌধুরী এবং তাঁর স্বামী যশোরের সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বরুণ কুমার পাল।
আদালত পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, যেহেতু শিশুটিকে কালিগঞ্জের গোলখালী শ্মশানের কাছে পাওয়া গেছে তাই সে হিন্দু পরিবারের বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিবেচনায় মোট ২৯টি আবেদনপত্র থেকে যাচাই-বাছাই হয়। কেবল আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করে সামাজিক, ধর্মীয় ও অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে ওই শিক্ষক দম্পতিকে দত্তক দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শিশুটি এখনো হাসপাতালে রয়েছে। তার বয়স মাত্র ১০ দিন।
উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের গোলখালী শ্মশানের কাছে একটি গাছে ব্যাগে ওই নবজাতক শিশুটিকে কে বা কারা ঝুলিয়ে রেখে যায়। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে শিশুটিকে প্রথমে সার্জিকেল ক্লিনিক ও পরে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে। স্থানীয়রা ফুটফুটে এই শিশুটির নাম রাখে ‘মহারাজ’। পরে শিশুটিকে দত্তক পেতে ২৯টি আবেদনপত্র আসে। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান রাসেলের নেতৃত্বে গঠিত শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটি গ্রহণের জন্য আবেদন আহ্বান করে। এসব আবেদন শিশু কল্যাণ বোর্ড সাতক্ষীরা শিশু আদালতে পাঠায়। আদালত আজ সোমবার এক আদেশে শিশু ‘মহারাজ’কে ওই শিক্ষক দম্পতির হাতে দত্তক হিসেবে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এখন থেকে তারাই হবেন তার পালক মা-বাবা।