সেন্টমার্টিনে আটকে আছেন ১২শ পর্যটক
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/11/08/st-martin-tourist.jpg)
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর কারণে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সেন্টমার্টিন থেকে ফিরতে পারেননি প্রায় ১২শ পর্যটক।
আজ শুক্রবার সকালে টেকনাফ জাহাজঘাট থেকে কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। সে হিসেবে প্রবাল দ্বীপে আটকে থাকা পর্যটকরা আজ ফিরতে পারছেন না।
দ্বীপের আবাসিক হোটেলগুলোতে তাঁরা নিরাপদে অবস্থান করছেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে গন্তব্যে ফিরবেন আটকেপড়া পর্যটকরা।
সেন্টমার্টিন ইউপি সদস্য হাবিব খান মুঠোফোনে জানান, বৃহস্পতিবার বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকে টেকনাফ ফেরেননি। হঠাৎ বৈরী আবহাওয়ায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে তাঁরা আটকে গেছেন।
তবে স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সেন্টমার্টিন থেকে না ফেরা পর্যটকের সংখ্যা প্রায় ১২শ হবে বলে জানান হাবিব খান।
সমুদ্রে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় সেন্টমার্টিনগামী কোনো জাহাজ আজ শুক্রবার না ছাড়তে নির্দেশ জারি করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জারি করা এই নোটিশ যথারীতি সংশ্লিষ্ট জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তমতে আজ সকালে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে কোনো জাহাজ ছাড়েনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনেক পর্যটকের টিকেটের টাকা ফেরত দেয় জাহাজ কর্তৃপক্ষ। এতে করে মৌসুমের শুরুতেই একটি ধাক্কা খেলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার এক হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে এসে টেকনাফ ফেরেননি। জরিপ চালিয়ে নীল দিগন্ত কটেজে ১২০ জন, বাগানবাড়ীতে ৬৪ জন, সমুদ্র কুটিরে ৩০ জন পর্যটকসহ বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে আরো আট শতাধিক পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন। তাঁদের সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সতর্ক সংকেতের কারণে দ্বীপে পর্যটক বেশিদিন অবস্থান করতে হলে থাকার হোটেল ও খাবার রেস্তোরাঁগুলোকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গন্তব্যে ফিরতে পারবেন।’
‘টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলকারী কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন টেকনাফ অফিসের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, সমুদ্রে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় আজ শুক্রবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলবে না। এ সংক্রান্ত বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পুনরায় জাহাজ চলাচল করবে,’ যোগ করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আটকেপড়া পর্যটকরা দ্বীপের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও কটেজে অবস্থান করবেন। তাঁদের প্রশাসনিকভাবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়ে দ্বীপে কতজন পর্যটক আছে, সে জরিপ চালানো হচ্ছে। সেন্টমার্টিনে আটকেপড়া পর্যটকদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশেষ ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।’
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে বর্তমানে কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, দি আটলান্টিক ক্রুজ, এমভি ফারহান ও এমভি বে-ক্রুজার চলাচল করছে।