স্বৈরশাসনের দুঃসহ দিনগুলোতে প্রেসক্লাবই ছিল সংগ্রামের কেন্দ্রস্থল : স্পিকার
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘স্বৈরশাসনের দুঃসহ দিনগুলোতে জাতীয় প্রেসক্লাবই হয়ে উঠেছিল আন্দোলন ও সংগ্রামের কেন্দ্রস্থল। জাতীয় প্রেসক্লাব গণতন্ত্রের আঁধার, অসাম্প্রদায়িক গতিশীল চেতনার ধারক, স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই প্রতিষ্ঠান এখনো দেশের মানুষের ভরসার স্থল।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘রোল অব মিডিয়া ইন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া রিলেশন্স : চ্যালেঞ্জেস এন্ড প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার আজ বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার বাহিনী প্রেসক্লাবে মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছিল এবং অপারেশন সার্চলাইটের সময়ে প্রেসক্লাব ভবন বিধ্বস্ত হয়ে যায়। সকল আন্দোলন সংগ্রামে কখনও আপস না করে মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার বাতিঘর জাতীয় প্রেসক্লাব।
ড. শিরীন শারমিন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে দুদেশের গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ককে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচাইতে সুসংহত করার লক্ষ্যে দুদেশের গণমাধ্যমকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন সরকার প্রধান শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শিক নেতৃত্বই দুদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভীত স্থাপন করেছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঙ্গার পানিবণ্টান চুক্তি, ভারতের সাথে স্থলসীমানা চুক্তি ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বিবিআইএন, বিমসটেক ইত্যাদি বিষয়ে উভয় দেশ কীভাবে আরও উপকৃত হতে পারে, সেক্ষেত্রে দুদেশের গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
স্পিকার বলেন, বৈশ্বিক সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারত শুধু ভৌগোলিক সীমান্তেই আবদ্ধ নয়, পঞ্চাশ বছর ধরে দুই দেশের শিল্প, সাহিত্য, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা লক্ষ্যণীয়। ভারত বাংলাদেশের সবচাইতে পুরোনো বন্ধু। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানের বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল ভারত। মুক্তিযুদ্ধকালে এদেশের প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। ভারতীয় গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ গণহত্যার খবর সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে নতুন সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ভারতীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি গীতার্থ পাঠক ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।