হিলিতে বাংলাদেশ-ভারত সাংবাদিক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ
বাংলাদেশ ও ভারতের গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। দুদেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতে গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় উপজেলার সরকারি কলেজ মাঠে প্রাণবন্ত এই আয়োজন করে হাকিমপুর প্রেসক্লাব।
ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রেসক্লাবের বিপক্ষে বাংলাদেশের হাকিমপুর প্রেস ক্লাবের সদস্যরা খেলায় অংশ নেন।
সাংবাদিকদের প্রীতি এই ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করেন স্থানীয় দর্শকেরা। ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, ‘যাঁরা মাঠ দাপিয়ে খেলেছেন তাঁরা কেউ প্রশিক্ষিত বা পেশাদার খেলোয়াড় নন। সকলেই বাংলাদেশ ও ভারতের কলমযোদ্ধা। ক্ষণিকের জন্য কলম ছেড়ে রঙিন জার্সি পরে মাঠে নামেন বাংলাদেশ ও ভারতের নবীন-প্রবীণ সাংবাদিকেরা। পুরো খেলা মাতিয়ে রাখেন মাঠের চারপাশে থাকা দর্শক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশের অনেক স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভারতের নাম। দুই দেশের সাংবাদিকদের এই প্রীতি ম্যাচটি সেই স্মৃতিকে আরও মধুর করে তুলেছে।‘
খেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, রেফারির বাঁশিতে ফুঁ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজ নিজ দেশের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মাঠে নামেন বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের কলম সৈনিকেরা। খেলাটি দেখতে আসেন নারী ও শিশুরাও। প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই ম্যাচটি ছিল ৪০ মিনিটের। রেফারির শেষ বাঁশিতে সমাপ্ত হয় এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।
পরে দুই দলের অধিনায়কদের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এসময় হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর এই প্রথম দুই দেশের সাংবাদিকদের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলো। দুই দেশের সাংবাদিকেরা খেলায় অংশ নেওয়ায় মাঠের দর্শকেরা বেশ আনন্দ উপভোগ করেছেন।‘
প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক আলোকিত সীমান্ত পত্রিকার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের গণমাধ্যমকর্মী এবং মানুষের মধ্যে যেন সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতে পারি, সেটি আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। সেজন্য বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবাদিকদের মধ্যে এমন একটি খেলার আয়োজন করা। এই খেলার মাধ্যমে আমরা সেই আশা পূরণসহ সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করতে পেরেছি। আগামীতেও আমরা ভাষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। তাতে আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা আরও গভীর হবে বলে আশা করি।‘
ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র মোহান্ত বলেন, ‘আমরা ফুটবল খেলার মাধ্যমে দুই দেশের সাংবাদিকসহ সব মানুষকে বলতে চাই, আমরা বাংলা ভাষাভাষী। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। আমরা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করি। মনে হয়, আজকের এই খেলার মাধ্যমে সেই বার্তা দিতে পেরেছি। আমাদের খেলা দর্শকরা উপভোগ করেছেন। আমরাও বেশ আনন্দ পেয়েছি।‘
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় ভারতীয় সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান স্থানীয় সাংবাদিকেরা। আজ রোববার সকালে তাঁরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। আগামী ৩০ নভেম্বর তাঁদের ভারতে ফেরার কথা রয়েছে।