১০০ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি সান্তাহার-রহনপুর রেলপথ প্রকল্প
১০০ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি সান্তাহার-রহনপুর রেলপথ প্রকল্প। ফাইলবন্দি এ প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখলে কৃষিভিত্তিক উত্তরাঞ্চলের কৃষিপণ্য সহজে বিপণনের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। এতে অর্থনীতির প্রসার ঘটবে। এ অঞ্চল হবে আরো সমৃদ্ধ।
বুধবার সকালে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধন থেকে বক্তারা প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ১৯২০ সালে তৎকালীন ইস্টার্ন বেঙ্গল স্টেট সরেজমিন রেলওয়ে প্রকল্পটি সার্ভে সম্পন্ন করে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে তিনবার জরিপের প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হলেও ফাইলটি বারবার চাপা পড়ে যায়। সে সময় ১৯৪ পৃষ্ঠা লিখিত রিপোর্টে এ প্রকল্পের একটি ব্লুপ্রিন্ট তদানীন্তন সরকারের কাছে দাখিল করা হয়। সব কিছু সম্পন্ন হওয়ার পর রেলওয়ে বোর্ড হঠাৎ করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তবে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে এ প্রকল্পটি আশার সঞ্চারিত হলেও ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর প্রকল্পটিও মুখ থুবড়ে পড়ে।
জামাত খান আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে একদিকে যোগাযোগ ও অন্যদিকে পণ্য পরিবহণে সুবিধা হবে। শুধু তাই নয়, ভারত ও নেপালের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্যও আরও প্রসারিত হবে।
এদিকে, মানববন্ধন থেকে প্রস্তাবিত ‘উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প’ বাস্তবায়নেরও দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ এ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ দুই যুগ করে আন্দোলন করে আসছে। সরকারের ডেল্টা প্ল্যানে থাকা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি বলেও উল্লেখ করেন তারা।
বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ফসল হিসেবে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্রতিও ছিল এ প্রকল্প বাস্তবায়ন। বরেন্দ্র অঞ্চলকে মরুময়তার হাত থেকে রক্ষা ও ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারের মাধ্যমে এ অঞ্চলের কৃষিতে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে।
বক্তারা বলেন, ১৯৮৮ সালের দিকে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রথম দাবি উঠে রাজশাহী থেকে। এ নিয়ে জাপানের জাইকা ও আইডাব্লিউএম এ প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা করে অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করে। কিন্তু সেই সময় থেকেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বিদেশি সাহায্য সংস্থার অজুহাতে প্রকল্পটি লাল ফিতায় আটকে রাখা হয়।
মানববন্ধন চলাকালে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, স্থানীয় দৈনিক সোনারদেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, উন্নয়নকর্মী গোলাম নবী রনি, নওগাঁর সাংবাদিক নেতা রেজাউল ইসলাম সেলিম, নারী নেত্রী সেলিনা বেগম, প্রকৌশলী খাজা তারেক, শিক্ষক আলাউদ্দিন আল আজাদ, সাংবাদিক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফাত্তাহ, যুব নেতা একেএম যোবায়েদ হোসেন, ডা. জাহিদ হাসান, যুবনেতা আল-আমিন প্রমুখ।