সাতক্ষীরায় দুজন খুন
সাতক্ষীরা সদর ও আশাশুনি উপজেলার দুটি গ্রামে গতকাল শুক্রবার রাতে দুজন খুন হয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আশাশুনির কাদাকাটি ইউনিয়নে নিহত যুবক জাকির হোসেন মুকুল (৩৫) আরার গ্রামের হোসেন মালির ছেলে। এ ছাড়া সদর উপজেলার খানপুরে নিহত ব্যক্তির নাম মাজেদ সরদার (৬০)।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাদাকাটি ও কুল্লা ইউনিয়নজুড়ে এক শ্রেণির প্রতারক পাঁচ লাখ টাকায় ১০০টি ‘সোনার পয়সা’ বিক্রি করে প্রতারণা করে আসছে। দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ও বদরতলার কয়েকজন লোক ‘পয়সা’ কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিক্রেতা আশাশুনির কাদাকাটির ইসরাফিলকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তবে ইসরাফিল পালিয়ে গেছেন। তাঁর স্ত্রী কিছু টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় জাকির, তুহিনুল হক তুহিন ও সোহেলসহ কয়েকজন তাঁর কাছ থেকে সব টাকা ছিনিয়ে নেন। শুক্রবার রাতে ইসরাফিল গোপনে বাড়ি এসেছে খবর পেয়ে জাকির তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে সেখানে যান। ইসরাফিল ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে ওই টাকা নিয়ে মারামারি হয়। এতে গুরুতর আহত জাকির রাতে মারা যান।
তবে জাকিরের স্ত্রী তোহরা ও বাবা হাকিম মালি জানান, রাতে কাদাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মফিজউদ্দিন মফিজ ইসরাফিলের বাড়িতে ওই টাকার জন্য এক সালিস ডেকে জাকিরকে মারধর করেন। এতে আহত হয়ে তিনি মারা যান।
অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মফিজ বলেন, ‘আমি সালিস সম্পর্কে কিছুই জানি না। তবে সোনার পয়সা বিক্রেতা ইসরাফিলের পলায়ন ও পাওনাদারদের চাপ সৃষ্টি সম্পর্কে আগে থেকেই জানতাম। বিষয়টি পুলিশকেও জানিয়েছি।’
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমল হুদা জানান, ময়নাতদন্তের জন্য জাকিরের লাশ সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এদিকে সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে একটি সালিস ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাজেদ সরদার (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
মাজেদের ছেলে আলী আহমেদ থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁর ভাই শহিদের শ্যালিকা টুম্পাকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আপত্তিকর কথা বলায় মাজেদ সরদার তাঁর লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ করেন। এরই জেরে শুক্রবার রাতে খানপুর গ্রামের আনিছুর, শাহাবুদ্দিন, মতিয়ার, জাফর ও সবুরসহ কয়েকজন তাঁর মাথায় ও বুকে ইট দিয়ে কয়েক দফায় আঘাত করেন। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে আলী আহমেদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ এ লাশটিও ময়নাদন্তের জন্য সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে বলে জানান সদর থানার ওসি এমদাদ শেখ।