প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে ভালো অবস্থায় মোংলা বন্দর
চলতি অর্থবছরে মোংলা বন্দরে বিদেশি জাহাজের আগমন, পণ্য হ্যান্ডেলিং ও আয় আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম বন্দরটিতে রেকর্ড সংখ্যক এসেছে বিদেশি জাহাজ। বেড়েছে পণ্য হ্যান্ডলিং ও আয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে মোংলা বন্দরে ৬২৩টি বিদেশি জাহাজ এসেছে। প্রায় ৭৫ লাখ মেট্রিক টন পণ্য হ্যান্ডেলিং হয়েছে। আর সব মিলিয়ে মুনাফা হয়েছে প্রায় ৭২ কোটি টাকা; যা আগের সব অর্থবছরের চেয়েও অনেক বেশি।
১৯৫০ সালে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ৭১ নটিক্যাল মাইল উজানে পশুর নদী ও মোংলা নালার সংযোগস্থলে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বন্দরটি। শুরুতে চালনা বন্দর নামকরণ করা হলেও ১৯৮৭ সালের মার্চ মাসে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মোংলা বন্দর।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলে এলেও নব্বইয়ের দশকে এসে এই বন্দর বেহাল দশায় পড়ে। বন্দরে বিদেশি জাহাজ আসার পরিমাণ মারাত্মক হারে কমতে থাকে। এমনও সময় গেছে, যখন দীর্ঘ এক মাসে মাত্র একটি বা দুটি জাহাজ ভিড়েছে এই বন্দরে। কোনো কোনো মাসে তো একটি জাহাজও ভিড়তে দেখেননি বন্দরসংশ্লিষ্টরা।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানামুখী উদ্যোগ নেয় মোংলা বন্দরকে ঘিরে। ফলে ধীরে ধীরে কর্মচঞ্চল হতে শুরু করে বন্দরটি। এ ছাড়া পশুর চ্যানেলে ড্রেজিং করে নাব্যতা সংকট দূর করা, ড্রেজারসহ নতুন নতুন যন্ত্রপাতি কেনা, নৌযান কেনা ও দক্ষ জনবল নিয়োগের ফলে বন্দরে জাহাজের আগমন বাড়তে থাকে। ফলে একসময় মৃত বন্দর হিসেবে পরিচিত মোংলা বন্দর দাঁড়ায় মাথা উঁচু করে।
এ বিষয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক মোংলা বন্দরের ওপর দৃষ্টি রাখছেন। ফলে এ বন্দরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে। বন্দরের এ উন্নয়নের কারণেই সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধীরে ধীরে বিদেশি জাহাজের আগমন, পণ্য হ্যান্ডেলিং ও আয় বেড়েছে। যার প্রমাণ ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর। মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর এবারই রেকর্ডসংখ্যক জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে। বন্দরকে ঘিরে বর্তমানে যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে, তাতে আগামীতে এ বন্দর দেশের অর্থনীতিতে আরো বেশি ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।