খালেদা জিয়ার জবাব দাখিল
ড্যান্ডি ডাইংয়ের ৪৫ কোটি টাকা ঋণখেলাপির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে জবাব দাখিল করেছেন।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌসের আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদিন মেজবাহ ও আজম খান তাঁর পক্ষে জবাব দাখিল করেন।
এদিকে, আজ মামলার ১১ নম্বর বিবাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে জবাব দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করেছেন ড্যান্ডি ডাইংয়ের পরিচালক কাজী গালিব আবদুস সাত্তার। পরে বিচারক সময়ের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গালিবসহ অন্য তিন বিবাদী মৃত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানের জবাব দাখিলের জন্য আগামী ৩০ আগস্ট দিন ধার্য করেন। এ সময় বিচারক আদেশে বলেন, আগামী ধার্য তারিখে জবাব দাখিল না করা হলে এ মামলায় ইস্যু গঠন করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, খালেদার পক্ষে তাঁর আইনজীবী জবাব দিয়ে বলেন, ‘ঋণ নিয়েছে ড্যান্ডি ডাইং কোম্পানি। কোনো ব্যক্তি ঋণ নেননি। ঋণের সব দলিলপত্রে প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের স্বাক্ষর রয়েছে। এখানে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। কোকো মারা যাওয়ার পর এখানে খালেদা জিয়ার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা থাকার কথাও নয়।’
এ মামলায় গত ১২ এপ্রিল খালেদা জিয়া, শর্মিলা রহমান এবং তাঁর দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানসহ চারজনকে হাজির হতে সমন জারি করেছিলেন ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোকসানা আক্তার হ্যাপি।
এ মামলার শুরুতে এই চারজন বিবাদীভুক্ত ছিলেন না। কোকোর মৃত্যুর কারণে ইসলামী শরিয়াহ আইনের বিধান অনুযায়ী উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁরা বিবাদীভুক্ত হন। গত ১৬ মার্চ আদালত তাঁদের বিবাদীভুক্ত করেন।
গত ৮ মার্চ খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিবাদীভুক্ত করার জন্য ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতে আবেদন করেন সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন।
২০১৩ সালের ২ অক্টোবর বিবাদীদের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে মামলা করেন সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল স্থানীয় কার্যালয় শাখার সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিবাদীরা ড্যান্ডি ডাইংয়ের পক্ষে ১৯৯৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করেন। ওই বছরের ৯ মে সোনালী ব্যাংক বিবাদীদের আবেদন করা ঋণ মঞ্জুর করে।
এর পর ২০০১ সালের ১৬ অক্টোবর বিবাদীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সুদ মওকুফ করে। পরে বিবাদীদের আবেদনক্রমে ঋণ পুনঃতফসিলীকরণও করা হয়। কিন্তু বিবাদীরা ঋণ পরিশোধ না করে ক্রমাগত কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
এ ছাড়া আরো অভিযোগ করা হয়, ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করা হলেও বিবাদীরা কোনো ঋণ পরিশোধ করেননি।
এ মামলার বিবাদীরা হলেন ড্যান্ডি ডাইং লিমিডেট, প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের ছেলে শামস এস্কান্দার ও সাফিন এস্কান্দার, মেয়ে সুমাইয়া এস্কান্দার, স্ত্রী নাসরিন আহমেদ, তারেক রহমান, প্রয়াত আরাফাত রহমান, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, মামুনের স্ত্রী শাহীনা ইয়াসমিন, কাজী গালিব আহমেদ, শামসুন নাহার ও মাসুদ হাসান।
এ মামলার ১০ নম্বর বিবাদী মোজাফফর আহমেদ মারা গেলে তাঁর স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে মাসুদ হাসানকে বিবাদীভুক্ত করা হয়।