খালেদা জিয়ার দুই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ৩ আগস্ট
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আসামিপক্ষের জেরা ও সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেরা করার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার।
আদালতের কার্যক্রম শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, জেরায় মামলার বাদী অর্থ আত্মসাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে স্বীকার করেছেন।
এর আগে মামলায় হাজিরা দিতে সকাল ১০টার কিছু পরে বকশীবাজারে আদালতের সামনে হাজির হন খালেদা জিয়া। বিচারক এজলাসে না আসায় কিছুক্ষণ নিজের গাড়িতেই অবস্থান করেন তিনি। পরে মামলার কার্যক্রম শুরু হলে আদালতে প্রবেশ করেন খালেদা। এ সময় তাঁর উপস্থিতিতে মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক হারুনুর রশিদকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এর আগে গত ১৮ জুন এই মামলার শুনানিতে খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন। ওই দিন বিচারক শুনানির পরবর্তী দিন ২৩ জুলাই নির্ধারণ করেন। খালেদা জিয়ার আদালতে উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে আদালতের ভেতরে-বাইরে ও বকশীবাজার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
খালেদার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দুই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।