রাখাইনের বনে লাশের মিছিল, দাবি রোহিঙ্গা মুসলিমের
মিয়ানমারের সেনা ও দুর্বৃত্তদের ভয়ে পাহাড়ের বনে পাঁচ দিন ছিলেন জাহিদুল্লাহ। তিনি রাখাইন রাজ্যের রাসিডং গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচ দিন লুকিয়ে থাকার পর ষষ্ঠ দিনের মাথায় বাংলাদেশের দিকে রওনা দেন তিনি। কিন্তু বন থেকে বেরিয়ে আসার সময় পথে দেখেন লাশের মিছিল। পাহাড়ি বনের আনাচ-কানাচে পড়ে রয়েছে লাশ।
মঙ্গলবার নাফ নদী পাড়ি দিয়ে টেকনাফের হাড়িয়াখালীতে পৌঁছায় জাহিদুল্লাহ ও তাঁর পরিবার। জাহিদুল্লাহর ছেলে তিন বছর বয়সী আনোয়ার সাদাত বাবার আঙুল ধরে বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিল। চেহারায় ক্লান্তি ভাব। পায়ের জুতাটা কাদামাখা।
জাহিদুল্লাহ জানান, মিয়ানমারের সেনা ও দুর্বৃত্তদের নৃশংসতা থেকে শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।
জাহিদুল্লাহ জানান, অত্যাচার-নির্যাতন ও খুন হয়ে যাওয়ার ভয়ে রোহিঙ্গারা কোনোমতে ঘর ছেড়ে পাহাড়ের বনে আশ্রয় নেয়। সেখানেও আছে বিপদ। সেনারা বনের ভেতরও অভিযান চালিয়ে গুলি করে।
বাংলাদেশে আসা এই রোহিঙ্গা মুসলিম জানান, বন থেকে যখন তাঁরা বের হয়ে আসেন, তখন দেখেন বনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে লাশ। সেখানে আছে নারী-পুরুষ, এমনকি অনেক শিশু। লাশের ওপর দিয়ে, লাশ পাশ কাটিয়ে বন থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে তাঁদের।
মিয়ানমারের রাসিডং বাজারে তরিতরকারিসহ বিভিন্ন নিত্যব্যবহৃত পণ্যের দোকান ছিল জাহিদুল্লাহর। এখন কিছুই নেই তাঁর। ঘরবাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে। কেবল পরনের পোশাকটা পরেই চলে আসেন তিনি।
নির্যাতনটা করে কারা—জানতে চাইলে জাহিদুল্লাহ বলেন, ৫০ জন সেনাসদস্য এলে তাদের সঙ্গে আরো ৫০ জন স্থানীয় প্রভাবশালী আসে। এরা মিলেই আগুন লাগায়, নির্বিচারে গুলি করে।