দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা
নাটোর ও গোপালগঞ্জে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।
এঁরা হলেন, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ইয়ারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মায়া খাতুন (১১) এবং গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সর্দি গ্রামের বাসিন্দা ও দিগনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রিক্তা আক্তার (১৪)।
গতকাল সোমবার রাতে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের পর হত্যার আলামত মিলেছে।
নারী অধিকার রক্ষায় কর্মরত বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে দেশে ৪৯২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ভয়াবহতার মধ্যেই দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটল।
তবে এ সময়ে মাত্র ১০০টি নারী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করে, ধর্ষণের অনেক ঘটনাই ‘অপ্রকাশিত’ থেকে যায়। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালে সারা দেশে ৯৩৯টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
নাটোর থেকে প্রতিনিধি হালিম খান জানান, মায়া খাতুন সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে যায়। দুপুরে স্কুল থেকেই তাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায় দুই দুর্বৃত্ত। পরে স্থানীয় স্লুইস গেট সংলগ্ন আম বাগানে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী সন্ধ্যায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
শিশুটির পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজিবুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্কুলছাত্রীর আপন ফুপাত ভাই মোবারক হোসেন ওরফে কালুকে পাশের সিংড়া উপজেলার শেরকোল থেকে এবং তাঁর বন্ধু মিঠুনকে ইয়ারপুরের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
আজ দুপুরে নাটোর সদর হাসপাতালে শিশু মায়া খাতুনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবুল কালাম আজাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মায়াকে ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত পাওয়া গেছে।’
এ দিকে আজ দুপুরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ করে। পরে বিক্ষুব্ধরা ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক মোবারক হোসেন কালুর বাড়িঘর ভাঙচুর করে।
গোপালগঞ্জ থেকে প্রতিনিধি মাহবুব হোসেন সারমাত জানান, স্কুলছাত্রী রিক্তা আক্তার (১৪) ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার গঙ্গাধর্দি গ্রামের মামা বজলু চৌকিদারে বাড়ি থেকে সকাল ১০টায় বের হয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সর্দি গ্রামে ফিরছিল। দীর্ঘ সময় পরও বাড়ি না ফেরায় লোকজন তার খোঁজ শুরু করে। রাতে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গ্রামের মজিদ মিয়ার পরিত্যক্ত ভিটা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
মুকসুদপুরের সিন্ধিয়াঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, স্কুলছাত্রীর শরীরে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দিগনগর ইউনিয়নের ফতেপট্টির উজ্জ্বল শেখ (২৮), নূর আলম শেখ (৩০), তুষার শেখ (২৪) ও হাইযুল শেখকে (২৩) আটক করা হয়েছে।