মালয়েশিয়া থেকে লাশ হয়ে ‘ফিরলেন’ রশিদ
জীবন-জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সীমারবাগ গ্রামের আবদুর রশিদ (৪৫); কিন্তু বাঁচতে পারেননি দেশটির পুলিশের হাত থেকে। পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে মৃত্যু হয় তাঁর। গতকাল মঙ্গলবার রশিদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
রশিদের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। মরদেহ দেখতে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী বাড়িতে ভিড় জমান। শোক ছড়িয়ে পড়ে সারা গ্রামে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, চলতি বছর গত মার্চ মাসে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন আবদুর রশিদ। পরে জানা যায়, আবদুর রশিদ গত মার্চ মাসে স্থানীয় মানব পাচারের দালাল জমির উদ্দিনের প্ররোচনায় মালয়েশিয়ার পথে রওনা হয়েছেন। এর কিছুদিন পর জমির উদ্দিন মোবাইল ফোনে রশিদের বড় ভাই আবদুল কাশেমকে জানান, টাকা না দিলে তাঁকে জাহাজে করে মালয়েশিয়ায় পাঠানো যাবে না। শেষ পর্যন্ত রশিদকে বাঁচানোর জন্য তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে আড়াই লাখ টাকা জমির উদ্দিনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর পর জমির অন্য দালালের মাধ্যমে তাঁকে মালয়েশিয়ার জঙ্গলে ছেড়ে দেন।
একপর্যায়ে আবদুর রশিদ মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। মালয়েশিয়ান পুলিশ তাঁকে অমানবিকভাবে মারধর করে আশ্রয়কেন্দ্রে বন্দি করে রাখে। দীর্ঘদিন অনাহার-অর্ধাহারে থাকার পর গত ২৬ জুলাই আবদুর রশিদ আশ্রয়কেন্দ্রেই মারা যান।
এ খবর বাঙালি মহলে ছড়িয়ে পড়ার পর হারুন ও নয়ন নামের দুই বাঙালি আবদুর রশিদের মরদেহ আশ্রয়শিবির থেকে নিয়ে নিজেদের খরচে বিমানযোগে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে পাঠান। বড় ভাই আবদুল কাশেম বিমানবন্দর থেকে রশিদের লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যান।
এ ঘটনায় নরসিংদী জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা আবদুর রশিদের লাশ দাফনের জন্য তাঁর বড় ভাই কাশেমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
একই দিন বিকেলে আবদুর রশিদের মরদেহ জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।