পুলিশ বলছে একটি, বাদী বলছেন দুটি অভিযোগপত্র
সিলেটের কানাইঘাটে একটি মামলার অভিযোগপত্র থেকে ৬০ আসামিকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে বাদীপক্ষ।
ওই মামলায় শুরুতে ৮৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি বাদীর ভাইয়ের। তবে পুলিশ বলছে, ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটিই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কানাইঘাট থানার ঢালাইচর এলাকায় ২০১৪ সালের ১৮ জুন ভোররাতে একদল সশস্ত্র লোক হামলা চালিয়ে একটি পাকা ঘর ও টিনের দুটি দোচালা ঘর ভেঙে ফেলে। তাদের মারপিটে নারী-পুরুষ, শিশুসহ কয়েকজন আহত হন। এ ব্যাপারে ওই বাড়ির ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে গত বছরের ১৯ জুন কানাইঘাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ৮৯ জনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করা হয়।
মামলার বাদী ফাতেমা বেগমের ভাই আলিম উদ্দিন বিন আলী রাজা গত রোববার এনটিভি অনলাইনকে জানান, প্রথমে কানাইঘাট থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করলেও পরবর্তী সময়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তদন্ত ভার পায়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়া দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৬ জুন ৮৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। বাদীপক্ষ যথারীতি অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি সংগ্রহ করে। এ নিয়ে গত ১৮ জুন সিলেটের একাধিক দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু কয়েক দিন পর মামলার বাদীপক্ষ খবর পান, এসআই মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়া অভিযোগপত্র বদলে ফেলেছেন। জিআরওর কাছ থেকে তিনি অভিযোগপত্র ফিরিয়ে নিয়ে নতুন অভিযোগপত্র দিয়েছেন।
আলিম উদ্দিন আরো জানান, দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৬০ জনকে বাদ দিয়েছেন এসআই মাসুদ পারভেজ। তিনি এ অভিযোগপত্র সংগ্রহ করে স্তম্ভিত হয়ে যান। এ ব্যাপারে এসআই মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁকে (আলিম) এ ব্যাপারে হৈচৈ না করতে অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে জানতে এসআই মাসুদ পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুটি অভিযোগপত্র দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ২৬ জনকে আসামি দিয়ে তিনি একটি অভিযোগপত্রই দিয়েছেন। একই কথা বলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন।
এদিকে, মামলার অভিযোগপত্র নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আলিম উদ্দিন গত ২ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তরে ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড (সিকিউরিটি সেল) শাখায় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, আসামিদের কাছ থেকে বিরাট অঙ্কের টাকা নিয়ে অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।