নেত্রকোনায় পাহাড়ি ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
টানা অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার তিনটি উপজেলায় ৫০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত তিন দিনে বেড়েছে সুমেশ্বরী, কংস, উব্দাখালীসহ ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নদীর পানি। বন্যাদুর্গত এলাকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শন করলেও সরকারি কিংবা বেসরকারি ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অন্যদিকে রোপা আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকের মাথায় হাত। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বড়খাপন, হরিণাকুল, কেশবপুর, চৌহাট্টা, বড়ইউন্দ, গোবিন্দপুর, রানাগাঁও, রাজনগর ও বাউশারী গ্রামের ভেতর পানি ঢুকেছে। এসব এলাকায় কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে। সহস্রাধিক পুকুর ও খামারের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন। বসতঘরে বন্যার পানি থাকায় রান্না করতে পারছেন না এসব এলাকার লোকজন। বন্যাকবলিত এলাকায় এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এ পর্যন্ত কলমাকান্দা উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নে ২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছেন বলে জানান বড়কাপন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ কে এম হাদিছুজ্জামান।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল জানান, অব্যাহত ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলের পানি স্থায়ী না হলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না। ঢলের পানি নেমে যাওয়ার পরপরই বলা যাবে ফসলের কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আরো কয়েকদিন পর কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে দুর্গাপুরের সুমেশ্বরী, কংস ও কলমাকান্দা উব্দাখালীসহ বিভিন্ন নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। তবে বৃষ্টি না হলে পানি কমতে শুরু করবে।