ঝড়, শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোনায় ফসলের ক্ষতি
দুই দিনের ঝড়ো বাতাস ও শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোনার বিভিন্ন স্থানে ধানসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল এবং এর আগে মঙ্গলবার বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া, বলাইশিমুল, দলপা ও রোয়াইলবাড়িসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমিগুলোর বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কাঁচা ও আধাপাকা বোরো ধান গাছ থেকে ঝরে যাওয়া এবং ক্ষেতের সঙ্গে ধান গাছ নুয়ে পড়ায় চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা।
এ ছাড়া ক্ষতি হয়েছে পাটসহ সবজি ক্ষেতের। এদিকে ক্ষতির পরিমাণ জানতে ও কৃষকদের খোঁজ-খবর নিতে মাঠে কাজ করছেন স্ব স্ব ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। তবে সুনির্দিষ্ট করে ক্ষতির পরিমাণ বলতে না পারলেও ৭০ হেক্টরেরও বেশি জমির বোরো ধান ক্ষতি হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চন্দন কুমার মহাপাত্র।
উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের নগুয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জাকির হোসেন নয়ন জানান, আমাদের এলাকার কৃষকরা একেবারে সর্বশান্ত। আর কয়েকদিন পরই আমরা পাকা ধান ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ফিকে হয়ে গেছে। বিবর্ণ হয়ে গেছে ক্ষেতের ধান। আমার প্রায় চার একর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড় শিলাবৃষ্টিতে ধান ক্ষয়ক্ষতির শিকার কৃষকরা এখন কান্নাকাটি করছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, কেন্দুয়ার আশুজিয়া ইউনিয়নের ভটেরগাতী, রাজিবপুর, চন্দপাড়া, ভগবতীপুর, সিংহেরগাঁও ও উত্তর আশুজিয়াসহ সবকটি গ্রামের কৃষকেরই বোরো ধান কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিংহেরগাঁও গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুস ছাত্তার জানান, আমাদের এলাকায় যে জমিতে কাটায় পাঁচ থেকে ছয় মণ ধান হতো সেই ক্ষেতে শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝড়ে পড়ায় বর্তমানে এক মণ ধানও পাওয়া যাবে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিলাশ চন্দ্র পাল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, জেলার কেন্দুয়া অঞ্চলের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি নিজেও কৃষকদের ক্ষতির চিত্র দেখতে মাঠে গিয়েছিলাম এবং ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে ও কৃষকদের খোঁজ-খবর নিতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। প্রায় ৭০ হেক্টরেরও বেশি বোরো জমির ধান ও সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।