‘শিগগির মুজাহিদের পূর্ণাঙ্গ রায়’
জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায়ের বিষয়ে আনা আপিলের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড, মুজাহিদ এবং সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ আপিলেও বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ ব্যাপারে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় পুনর্বহালের আরজি জানিয়ে রিভিউ আবেদন করা হবে।’
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা আরো জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলার নিষ্পত্তি হলেও এখন পর্যন্ত তিনটি মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়নি। এর মধ্যে অচিরেই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মুজাহিদের মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন মাহবুবে আলম।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি মামলা এ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে আপিলে নিষ্পত্তি হয়েছে। আপিলের প্রথম রায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তির পর ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর যাবজ্জীবন সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আপিল বিভাগ। এর রায় রিভিউয়ের আবেদনও খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ওই বছর ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর আপিলের দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাজা মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে কমিয়ে তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এখনো প্রকাশিত হয়নি।
আপিলের তৃতীয় রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়। ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখার রায়ের বিরুদ্ধে কামারুজ্জামানের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনও খারিজ করে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ১১ এপ্রিল রাতে এ ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে কামারুজ্জামান হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি যার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হলো।
গত ১৬ জুন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের আপিলের চূড়ান্ত রায়েও মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ। এখন মুজাহিদের মামলায় আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
গত ২৯ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন (সাকা) কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। এ মামলায়ও আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
সাঈদী, মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে তাঁরা রায় রিভিউয়ের আবেদন করবেন।
আপিলে আরো আটটি মামলা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব মামলার আসামিরা হলেন জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেন, জাতীয় পার্টি নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম, জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সাবেক সংসদ সদস্য পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বার ও মাহিদুর রহমান।