মানবপাচারকারী ‘গডফাদার’সহ গ্রেপ্তার ২০

টেকনাফ থেকে মানবপাচারকারী এক ‘গডফাদার’সহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চলতি বছরের শুরুর দিকে দক্ষিণ এশিয়ায় অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে সৃষ্ট সংকট পুনরায় তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে।
বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপি বলেন, গত এক মাসে ২০ মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ এলাকা থেকে দিল মোহাম্মদ (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি মানবপাচারের ‘গডফাদার’ বলে পরিচিত।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক (এসপি) কবির হোসেন এএফপিকে বলেন, মালয়েশিয়া থেকে ফেরা দিল মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জীর্ণ নৌকায় কয়েকশ বাংলাদেশিকে বঙ্গোপসাগর দিয়ে পাচারের অভিযোগে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড দুই দেশেই মোহাম্মদকে খোঁজা হচ্ছিল।
চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানদের মালয়েশিয়া নেওয়ার নাম করে নৌকায় করে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। অনেক নৌকায় হাজার হাজার মানুষ পানি ও খাবার বিহীন অবস্থায় সাগরে ভাসতে থাকে। থাইল্যান্ডের পুলিশ জঙ্গলেও এই মানুষদের নির্যাতনের অনেক চিহ্ন পায় এবং অনেক গণকবরও পাওয়া যায়।
পরিদর্শক (এসপি) কবির হোসেন বলেন, মে মাসের পর থেকেই বাংলাদেশের মানবপাচারকারীরা পালিয়ে ছিল। ধীরে ধীরে তাঁরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। বর্ষার শেষে এখন সাগর ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে পড়ছে। সামনের সপ্তাহগুলোতে সাগর আরো শান্ত হয়ে পড়বে। তখন আবার মানবপাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।
অভিবাসন বিষয়ে অভিজ্ঞ সাকিরুল ইসলাম এএফপিকে বলেন, মানবপাচারকারীরা বেশ কয়েকদিন নীরব থেকে শক্তি সংগ্রহ করেছে। যেকোনো সময়ে তাঁরা আবার পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।
চলতি বছর মে মাসের দক্ষিণ এশিয়ায় অভিবাসী সংকটের ঘটনা মানবপাচার পুরো প্রক্রিয়া উন্মোচিত করে। বাংলাদেশে দরিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে এবং মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানরা নিপীড়ন থেকে বাঁচতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাচারকারীদের শিকার হয়। ওই সময়ই মানবপাচারকারীদের ব্যাপারে তৎপর হয়ে ওঠে বাংলাদেশের পুলিশ। মে মাসেই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চার মানবপাচারকারী নিহত হয়। এ ছাড়া ৯০ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।