চারদিন আগে নিখোঁজ শিক্ষিকার লাশ মিলল বাঁশঝাড়ে
শরীয়তপুরের নিখোঁজ স্কুলশিক্ষিকা রুবিনা আক্তার রুমার (৩৩) মরদেহ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিজবাড়ির পেছনের বাঁশঝাড় থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রুবিনা আক্তার রুমা জাজিরা উপজেলার মুলনা ইউনিয়নের মধ্য রায়েরকান্দির মৃত হাসান মুন্সীর মেয়ে। কিছু দিন আগে গ্রামের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর ফোনে বিয়ে হয়।
বড় মুলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খান আবদুর রহিম জানান, রুবিনা আক্তার রুমা ২০১০ সাল থেকে তাঁর বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে আসরের নামাজ শেষে ব্যক্তিগত কাজে তিনি উপজেলা সদরে যান। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও রুমা বাড়ি না ফেরায় তাঁর মা মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো সন্ধান না পেয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রুবিনার ভাই শামসুল হক মুন্সি জাজিরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
আজ বিকেলে বাড়ির পেছনের বাঁশঝাড় থেকে লাশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন দেখতে পায়। পরে জাজিরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
প্রধান শিক্ষক খান আবদুর রহিম আরো বলেন, ‘রুবিনা ব্যক্তিগতভাবে ধার্মিক ও খুবই ভালো চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাঁর এ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’
মৃত রুমার ভগ্নিপতি কামাল মাদবর বলেন, ‘রুবিনা আর আমার শাশুড়ি বাড়িতে থাকেন। রুবিনার একমাত্র ভাই শামসুল হক মুন্সি ঢাকায় থাকেন। বাকি চার বোন তাঁদের শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। গত শুক্রবার আমার শাশুড়ির কাছে জাজিরা উপজেলা শহরে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন রুবিনা। এরপর তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা মৃত্যুর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানতে পারিনি। ’
এদিকে মরদেহে পচন ধরায় প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে জাজিরা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাঁশঝাড়ের সঙ্গে দাঁড় করানো অবস্থায় অর্ধগলিত ও পোকায় ধরা লাশ উদ্ধার করে। অর্ধগলিত লাশের গায়ে পোকা ধরায় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করতে পারেনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে আমরা মৃত্যুর কারণ জানতে জোর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।’
এদিকে রুবিনা আক্তার রুমার এমন মৃত্যুতে তাঁর সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।