যুবলীগকর্মী হত্যা মামলার সাক্ষীর ছেলেকে খুন
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নে নাহিদ মীর মালত (১৫) নামের এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নাহিদ শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের মালতকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক আলী হোসেন মীর মালতের ছেলে। স্থানীয় মহিষখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল নাহিদ।
রাজনগরের যুবলীগকর্মী ইকবাল হোসেন মাইকেল হত্যা মামলার সাক্ষী নিহত নাহিদ মীর মালতের বাবা আলী হোসেন মীর মালত। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মামলার সূত্র ধরে নাহিদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবার, সহপাঠী-স্বজনসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুরো এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নড়িয়া থানা পুলিশ ও নিহত নাহিদের চাচাতো ভাই রবিউল আউয়াল মীর মালত জানান, রাজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন গাজী এবং একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী উজ্জামান মীর মালতের সমর্থকদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জেরে একাধিকবার হামলা-মামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
২০১৭ সালে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে সাবেক চেয়ারম্যান আলী উজ্জামান মীর মালতের সমর্থক স্থানীয় যুবলীগকর্মী ইকবাল হোসেন মাইকেল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। মামলার সাক্ষী আলী হোসেন মীর মালত কয়েক দিন আগে সাক্ষ্যও দেন।
নিহতের চাচাতো ভাই রবিউল আউয়াল মীর মালত দাবি করেন, ‘সাক্ষ্য দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক আকন্দ নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নাহিদ মহিষখোলা স্কুলের মাঠে ভ্যানের ওপর বসে ছিল। এ সময় ১৫/২০ সন্ত্রাসী দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাহিদের ওপর হামলা চালায় এবং গুরুতর আহত করে। তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে রাজনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যন আলী উজ্জামান মীর মালত বলেন, ‘যুবলীগকর্মী ইকবাল হোসেন মাইকেল খুনের ঘটনায় আলী হোসেন মীর মালত সাক্ষ্য দেওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গাজীর মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।