সুরেশ্বর দরবার শরিফে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৩৫
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘরিসার ইউনিয়নের সুরেশ্বর দরবার শরীফে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংষর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৪টি রাবার বুলেট ছোড়ে। রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হন আটজন। সংষর্ষে পুলিশসহ দুই পক্ষের অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক, নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার সুরেশ্বর দরবার শরিফের বর্তমান গদিনশীল সৈয়দ শাহ নূরে কামালের সঙ্গে সৈয়দ শাহ নূরে আক্তার হোসেন চুন্নুর দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনায় আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। চাচা সৈয়দ শাহ নূরে কামাল ও ভাতিজা সৈয়দ শাহ নূরে আক্তার হোসেন চুন্নু উভয়েই গদিনশীন হিসেবে নিজেদের অবস্থান থেকে দরবারের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
দুপুরে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে পুলিশের একটি দল নিয়ে জারিকারক সুরেশ্বর দরবার শরিফে যায়। তখন চুন্নু পক্ষের লোকজন কামাল নূরীর আস্তানার সামনের পাকা সড়ক সাবল দিয়ে ওঠাতে থাকেন। কামাল নূরীর লোকজন বাধা দিলে দুইপক্ষের কজনদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষ বাধে।
এতে নড়িয়া থানা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আবু বকর মাতব্বর, শরীয়তপুর পুলিশ লাইনসের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রবিউল, পুলিশ সদস্য ইয়াকুব, ইমাম, আনিছ, সিফাত, মোক্তার, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জারিকারক মনোজ বিশ্বাস, আক্কাস, পরান চন্দ্র দাস, মমিন, নজরুল ইসলাম, দরবারের ভক্ত মাহবুব, মো. বশির, নয়নসহ আরো অনেকে আহত হন। এ ছাড়াও রাবার বুলেটে আঘাতে আওলাদ, মো. জাকির হোসেন, মাসুম, ওসমান গনি, খোরশেদ, নুরু, শফিক, নুরুল ইসলাম আহত হন।
আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিক, নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ নুরুল আমিন (৭০) বলেন, সংঘর্ষের সময় ওখানে গেলে আমার পিঠে দুটি গুলি লাগে।
সৈয়দ শাহ নূরে কামাল বলেন, নড়িয়া-সুরেশ্বর সড়কের ইশাপাশা কালভার্ট থেকে সুরেশ্বর দরবার শরিফের পশ্চিম ও উত্তর দিকে সাধারণ লোকজনের চলার জন্য এলজিইডি ২০১৩-১৪ সালে একটি পাকা সড়ক তৈরি করে। সেই সড়কে আমার ও চুন্নুর জমি রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুন্নু ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে সড়কটির পিচসহ খোয়া তুলতে থাকে, তখন আমার লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে।
অপর গদিনশীন সৈয়দ শাহ নূরে আক্তার হোসেন চুন্নু বলেন, ঘটনাটি আমাদের পারিবারিক বিষয়।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে সুরেশ্বর দরবারের কামাল ও চুন্নুর জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য গেলে দুই পক্ষের সংষর্ষ হয়। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৪টি রাবার গুলি ছোঁড়ে।
ওসি জানান, সংঘর্ষে আদালতের জারিকারক ও পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।