টেলি সামাদের মৃত্যুতে অভিনয়শিল্পীদের শোক

‘জীবদ্দশায় যেমন নির্মল আনন্দ দিয়ে গেছেন সবাইকে। এই নবযাত্রা তেমনই নির্মল আনন্দময় হোক আপনার। আত্মার শান্তি কামনা করছি হে গুণী শিল্পী।’ প্রখ্যাত অভিনেতা টেলি সামাদের মৃত্যৃতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওপরের কথাগুলো লিখে শোক প্রকাশ করেছেন অভিনয়শিল্পী রুনা খান।
রুনা খানসহ অনেক শিল্পী টেলি সামাদের মৃত্যুতে শোকাহত হয়েছেন।
অভিনেতা শতাব্দী ওয়াদুদ বলেন, ‘আরেকজন অভিনেতার চির প্রস্থান! টেলি সামাদ চলে গেলেন আজ! বিদায় অভিনেতা! আপনার অভিনয়ের মাধ্যমে যে আনন্দ আপনি দিয়ে গেছেন, তা দর্শকদের মনে থাকবে আজীবন।’
ফেসবুকে নায়ক সাইমন সাদিক লিখেছেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। আল্লাহ আপনাকে বেহেস্ত দান করুন।’
নায়িকা তমা মির্জা বলেন, ‘হয়তো ওপারেই আপনি বেশি ভালো থাকবেন।’
অন্যদিকে, অধরা খান বলেন, ‘মৃত্যুর মিছিলে আরো একজন শামিল হলেন। ভালো থাকবেন ওপারে টেলিসামাদ ভাই। রেস্ট ইন পিস।‘
আজ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে টেলি সামাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রায় এক বছর ধরেই শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ে হাসপাতাল-বাসায় আসা-যাওয়া করছিলেন টেলিসামাদ। এর মধ্যে শরীরে অস্ত্রোপচারও করা হয়।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টায় হঠাৎ করেই আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন টেলি সামাদ। তার পরই তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। গতকাল শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মারা গেলেন তিনি।
সত্তরের দশকের শুরুতে রূপালি পর্দায় পা রাখা টেলিসামাদ ছয় শতাধিক বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন টেলিসামাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। ছবি আঁকার নেশার পাশাপাশি অভিনয়ের নেশাও ছিল তাঁর।
১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় তাঁর। সাড়ে চার দশক ধরে ঢালিউডে কাজ করছেন তিনি। অনিমেষ আইচ পরিচালিত ২০১৫ সালে টেলিসামাদের সর্বশেষ ছবি ‘জিরো ডিগ্রি’ মুক্তি পায়।
টেলিসামাদের অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘রিকসাওয়ালার ছেলে’, ‘কুমারী মা’, ‘অশিক্ষিত’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘মাটির ঘর’, ‘মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি’, ‘কাজের মানুষ’ ইত্যাদি। এরমধ্যে ‘নয়নমণি’ ও ‘পায়ে চলার পথ’ ছবিতে অভিনয়ের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।
পারিবারিকভাবে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, খাদ্যনালির সমস্যা, রক্তে প্লাটিনাম কমে যাওয়া, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন টেলিসামাদ। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর হার্টে বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের ২০ অক্টোবর তাঁর বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতেও জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।