আবহাওয়ার সবশেষ বার্তায় যা বলা হয়েছে

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাব আজ সকাল থেকে ভারতের ওডিশা প্রদেশে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানের পুরি উপকূলে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকালে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে দুপুরের পর থেকে। আজ মধ্যরাত নাগাদ সেটি খুলনা ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।
সকাল সাড়ে ৭টায় আবহাওয়ার সবশেষ এই বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিটি ‘ফণী’ সম্পর্কে ৩৫তম বার্তা।
তবে এরপর সকাল ১০টার দিকে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আবহাওয়া সবশেষ ৩৫তম বার্তার মতোই আছে। তবে ঢাকা ও এর আশপাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। একনাগাড়ে না হলেও থেমে থেমে হচ্ছে। এটি বৃদ্ধি পাবে।’
আবহাওয়ার সবশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, ‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ সামান্য উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.৯ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৫.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকেল নাগাদ ভারতের ওডিশার উপকূল অতিক্রম করতে পারে এবং পরবর্তী সময়ে ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে আজ মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আজ দুপুর থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার-পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।