খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন স্থগিত
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/05/22/photo-1558492400.jpg)
দাবি পূরণের আশ্বাসের পর খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট স্থগিত করেছেন।
বিকেলে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে যশোর-খুলনা অঞ্চলের পাটকল শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন এ ঘোষণা দেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বিজেএমসি ঈদুল ফিতরের আগে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি, বেতন-ভাতা প্রদান, মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন ও অন্যান্য দাবি ধাপে ধাপে পূরণের আশ্বাস দেয়।
দুই সপ্তাহের বকেয়া এই সপ্তাহে দেওয়া হবে এবং বাকিটা পরের সপ্তাহে দেওয়া হবে বলে জানান শ্রমিকরা।
পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, মজুরি কমিশন কার্যকর ও প্রতি সপ্তাহের মজুরি প্রতি সপ্তাহে প্রদানসহ নয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকরা রাজপথে আন্দোলন করে আসছিলেন।
গত ৫ মে রাত থেকে পাটকল শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন। খুলনার প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলস, স্টার জুট মিলস, দৌলতপুর জুট মিলস, খালিশপুর জুট মিলস, আলিম জুট মিলস, ইস্টার্ন জুট মিলস, ক্রিসেন্ট জুট মিলস এবং যশোরের জেজেআই জুট ও কার্পেটিং মিলস শ্রমিকরা এই কর্মবিরতিতে অংশ নেন।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ এবং সিবিএ ও নন-সিবিএ পরিষদ যৌথভাবে ১২ দফা দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। এই দাবিতে শ্রমিকরা এপ্রিল মাসে দুই দফা ধর্মঘট পালন করেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রেল ও রাজপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।
শ্রমিক নেতারা জানান, খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলিম, ইস্টার্ন এবং যশোরের কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলে বর্তমানে ১৩ হাজার ২৭১ শ্রমিক কাজ করছেন। মজুরি বকেয়া থাকায় শ্রমিকরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
শ্রমিকদের ঘোষিত দাবির মধ্যে রয়েছে—সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া টাকা প্রদান, টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ীকরণ, পাট মৌসুমে পাট ক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।
বিজেএমসির অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা জোনে মোট ২৬টি পাটকল রয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম জোনে রয়েছে আমিন জুট মিলস লিমিটেড ও ওল্ড ফিল্ডস লিমিটেড, গুল আহমেদ জুট মিলস লিমিটেড, হাফিজ জুট মিলস লিমিটেড, এমএম জুট মিলস লিমিটেড, আরআর জুট মিলস লিমিটেড, বাগদাদ-ঢাকা কার্পেট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, কর্ণফুলী জুট মিলস লিমিটেড, ফোরাত কর্ণফুলী কার্পেট ফ্যাক্টরি, গালফ্রা হাবিব লিমিটেড ও মিলস ফার্নিসিং লিমিটেড। অন্যদিকে খুলনায় রয়েছে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল।