সাতক্ষীরায় দ্বিতীয় জয়নাল হাজারীর জন্ম প্রতিহত করা হবে

সাতক্ষীরায় নতুন কোনো এরশাদ শিকদার অথবা জয়নাল হাজারীর জন্ম হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহিদ আলাউদ্দিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, যারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে হামলা করেছে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। হামলাকারী মহলটি একে একে ভোমরা বন্দর, বাস টার্মিনাল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বণিক সমিতি, রেড ক্রিসেন্ট, আহসানিয়া মিশন এমনকি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখল করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদেরকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করা হবে।
এসব ঘটনার নেপথ্যে সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি রয়েছেন বলে অভিযোগ করে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা আরো বলেন, জেলা আওয়ামী লীগসহ সব প্রগতিশীল দল এক ও অভিন্ন পথে প্রতিরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।
স্পষ্ট ভাষায় প্রতিনিধিরা আরো বলেন, এসবের বিচারের দায়িত্ব আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দলীয় নেতারা সাক্ষাৎ করে শান্ত সাতক্ষীরাকে যাদের ইন্ধনে অশান্ত করে তোলা হচ্ছে তাদের চিহ্ণিত করে অভিযোগ দিতে হবে।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তিনদিনের মাথায় প্রেসক্লাব ভবনে অনুষ্ঠিত বিশিষ্ট নাগরিক সমাবেশে আরো বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারে।
প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টাকারী দুষ্কৃতিকারীদের এখনও কেন আইনের আওতায় আনা হয়নি তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, হামলাকারীদের রক্ষা করার যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রেসক্লাবে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি করছি। একই সাথে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানাচ্ছি।’
জড়িতদের শাস্তি দাবি করে প্রধান অতিথি আরো বলেন, ‘আমরা একাত্তরে মিত্র বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া সাতক্ষীরাকে মুক্ত করেছি। ২০১৩ এর সহিংসতা প্রতিরোধ করেছি। ১৯৯৪ তে সাতক্ষীরায় গোলাম আযমের কর্মসূচি ভণ্ডুল করে তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। এবারও সাতক্ষীরার চার এমপিকে সাথে নিয়ে আমরা সব সমস্যা সমাধান করতে পারব।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেসক্লাবে হামলা করে যারা রক্ত ঝরিয়েছে তারা নিন্দনীয় অপরাধ করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে।’
সুধী সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সদ্য সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু, জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি ডা. আবুল কালাম বাবলা, নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, জাসদের ওবায়দুস সুলতান বাবলু, বাসদ নেতা অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন বেলাল, জেএসডির সুধাংশু শেখর সরকার, সাম্যবাদী দলের তরিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির আনোয়ার জাহিদ তপন, গণফোরামের আলী নুর খান বাবুল, বাংলাদেশ জাসদের ইদ্রিস আলী, বাসদের নিত্যানন্দ সরকার ও খগেন্দ্রনাথ ঘোষ, সিপিবির মসিউর রহমান পলাশ প্রমুখ।
এ ছাড়াও বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী।