শ্যালা নদীতে জাহাজ চলাচল বন্ধের সুপারিশ
কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ এম ভি জিয়া রাজের মাস্টার বুলু গাজীর গাফিলতি ও খামখেয়ালিপনার কারণে নৌযানটি সুন্দরবনসংলগ্ন মংলার পশুর চ্যানেলে ডুবে গেছে। এই তথ্য উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
ঘটনার তিনদিন পরও কার্গোর মালিকপক্ষ নৌযানটি উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি। একই সঙ্গে তারা বন্দর চ্যানেলে জাহাজ চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং শ্যালা নদীতে জাহাজ চলাচল বন্ধের সুপারিশ করেছে। জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর তা দ্রুত উদ্ধারের জন্য মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে উদ্ধারকারী জাহাজ রাখার সুপারিশ করেছে।
ওই কমিটি আজ বাগেরহাট বিভাগীয় প্রধান বন কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
দুর্ঘটনার পর বন বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন সুপারিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ শুক্রবার বাগেরহাট বিভাগীয় প্রধান বন কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
এদিকে ডুবে যাওয়া কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ এম ভি জিয়া রাজকে এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে এখনো আছেন স্থানীয় প্রশাসন, কোস্টগার্ড ও বন বিভাগ।
সহকারী বন সংরক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন জানান, বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ার বিদেশি জাহাজ থেকে প্রায় ৫০০ টন কয়লাবোঝাই করে যশোরের নওয়াপাড়ার উদ্দেশে রওনা হয় এম ভি জিয়া রাজ নামক কার্গো জাহাজ। জাহাজটি মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পশুর চ্যানেলের জয়মনি এলাকায় অতিক্রমকালে তলা ফেটে ডুবে যায়। এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি আজ বাগেরহাট বিভাগীয় প্রধান বন কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠনের পর কয়লাবোঝাই কার্গোডুবির ঘটনায় সুন্দরবনের জলজ, বনজ ও প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় গত বুধবার বিকেলে মংলা থানায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করে বন বিভাগ। মামলায় এমভি জিয়া রাজ কার্গো জাহাজের মালিক দিল খান ও মাস্টার মো. ভুলু গাজীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাস্টার ভুলু গাজীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাহাজটি বর্তমানে বন্দরের মূল চ্যানেলের বাইরে নিমজ্জিত থাকায় এই চ্যানেল দিয়ে জাহাজ ও নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। তবে ভবিষ্যতের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বন্দর চ্যানেলে জাহাজ চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা জরুরি। যেমন : জাহাজের ফিটনেস আছে কি না, অন্যান্য কাগজপত্র ঠিক আছে কি না এসব দেখে বন্দর চ্যানেলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া দরকার।