প্রেমিকার জন্য ‘গায়ে আগুন দেওয়া’ তরুণের মৃত্যু

প্রেমিকাকে কাছে পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন তরুণ বিশ্বজিৎ দে (২২)। কিন্তু প্রেমিকার পরিবারের কেউ বিয়েতে রাজি না হওয়ায় নিজ দেহে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। শেষে প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। এক সপ্তাহ পর আজ বৃহস্পতিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশ্বজিতের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্রকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ বিকেলে বিশ্বজিতের লাশ নিয়ে আসা হয় তাঁর গ্রামের বাড়ি একই উপজেলার গোপালপুর গ্রামে।
খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু জানান, বিশ্বজিতের সঙ্গে অপ্রাপ্ত বয়স্ক একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিশোরী প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে বিশ্বজিৎ গত ৩০ আগস্ট দুপুরে ১৫-২০ জনকে ওই মেয়েটির বাড়িতে পাঠায়। মেয়েটির বিয়ের বয়স না হওয়ায় পরে বিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় বিশ্বজিতের আরো তিন বন্ধু মেয়েটির বাড়িতে এসে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য বোঝায়। তবে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয় বয়স না হলে বিয়ে দেবে না।
চেয়ারম্যান আজিজুর বলেন, ‘পরের দিন সকালে বিশ্বজিৎ প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেন। মেয়ের পরিবার রাজি না হওয়ায় বিশ্বজিৎ সেখানেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। একপর্যায়ে আগুন গায়ে ছড়িয়ে পড়লে সইতে না পেরে বিশ্বজিৎ পাশের একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।’
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সরদার জানান, বিশ্বজিতের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ছেলে ও মেয়েটির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিশ্বজিত নামের ছেলেটি মারা গেছে বলে শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বিশ্বজিতের মামা সঞ্জয় দত্ত অভিযোগ করেছেন, ‘প্রেমিকার বাড়িতে গেলে তাদের বাড়ির লোকজন বিশ্বজিতকে মারপিট করে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর পুকুরে ফেলে দেয়।’