আওয়ামী লীগের সব জারি-জুরি ফাঁস হয়ে গেছে : ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সব জারি-জুরি ফাঁস হয়ে গেছে। তারা লুকিয়ে লুকিয়ে নয় প্রকাশ্যে সব চুরি করছে, ডাকাতি করছে, তা প্রকাশ হয়ে গেছে।’
আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহী নগরীর মাদ্রাসা মাঠের পূর্ব পাশের রাস্তায় দলের বিভাগীয় সমাবেশে এ সব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘জনগণের মালিক জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে গিয়ে পুরস্কার আর পুরস্কার নিয়ে বেড়াচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘বাইরের পুরস্কার নিয়ে লাভ হবে না। দেশের মানুষের ভালোবাসা নেওয়ার চেষ্টা করেন। আর এটি একমাত্র সম্ভব বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে যদি মুক্তি দেন। এখনো সময় আছে। বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হলে দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হবে এবং খালেদা জিয়ার মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আসবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই জাত, যারা জনগণকে প্রতারণা করে। জনগণকে মিথ্যা কথা বলে। জনগণকে বোকা ভাবে। তারা ঠিক একইভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে, মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, কথা বলার অধিকার বন্ধ করে দিয়ে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বন্ধ করে দিয়ে আজকে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে।’
ফখরুল আরো বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে গত ১৮ মাস ধরে আমরা চেষ্টা করছি, আন্দোলন করছি, সংগ্রাম করছি। আমরা নির্বাচনে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকার একটা দানবের মতো আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে।’
মির্জা ফখরুল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সংসদ ভেঙ্গে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপক্ষে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বর্তমান সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার। তিনি মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।’
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, কর্নেল (অব) আব্দুল লতিফ ও অ্যাডভোকেট কামরুল মনির, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও শামা ওবায়েদ, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা, বর্তমান আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, বগুড়া বিএনপির আহ্বায়ক জি এম সিরাজ এমপি প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।
এদিকে, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মহানগরীতে ব্যাপক নিরাপত্তা নেয় মহানগর পুলিশ। রোববার সকাল থেকেই মহানগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা দেখা গেছে। সমাবেশস্থলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের (কিউআরটি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। প্রস্তুত রাখা হয় জলকামান ও এপিসি কার। বৃষ্টির কথা বলে পরিবহণ শ্রমিকরা রাজশাহীর সব রুটে রোববার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিলেও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে দলের নেতাকর্মীরা রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দেয়। এর আগে শনিবার ২২টি শর্তে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের পূর্বপাশের পাকা সড়কে বিএনপিকে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয় মহানগর পুলিশ।