বৃষ্টির মধ্যেও সাতকানিয়া উপজেলায় নির্বাচনের প্রচার

দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠেছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলা নির্বাচন। এ নির্বাচনে সবকটি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার কথা রয়েছে।
এদিকে, প্রচারণার শুরুতে বৃষ্টি না থাকলেও কয়েক দিন থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। তবে কিছুতেই সময় নষ্ট করতে চান না প্রার্থীরা। বৃষ্টির মধ্যেই প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।
নির্বাচনী মাঠ সরেজমিন পরিদর্শন, একাধিক প্রার্থী, দলীয় নেতা ও সাধারণ ভোটারের সঙ্গে কথা বলে এসব খবর পাওয়া গেছে। প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা প্রতিদিন প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখলেও ভোটে আগ্রহ কম ভোরটারদের। আগের নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ উপজেলার নির্বাচনে জামায়াতের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ভোট নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সচেতন মহল।
এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাতকানিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাতকানিয়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল গাফফার চৌধুরী (ধানের শীষ) ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবদুল মোনায়েম মুন্না চৌধুরী (মোটরসাইকেল) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমানসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
বিএনপি প্রার্থী আবদুল গাফফার চৌধুরীর পক্ষে মনোনয়ন জমাদানের দিন সাতকানিয়া বিএনপির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনসহ দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে দেখা গেলেও বর্তমানে সাতকানিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গণসংযোগ ও পথসভা চলছে। মনোনয়ন জমা দিয়েই পৌরসভা ও প্রতিটি ইউনিয়নে নেতাকর্মীদের নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত করার জন্য দলের বর্ধিত সভার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে বিএনপি প্রার্থী। তিনি হাতেগোনা কয়েকটি ইউনিয়নে দলের বর্ধিত সভা করতে পারলেও বেশিরভাগ ইউনিয়নে করতে পারেননি। দীর্ঘদিন থেকে জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ উপজেলার বিএনপি প্রার্থী প্রচারণায় থেকে জামায়াতের ভোটব্যাংকের ওপর ভর করে বিজয়ী হতে পারবেন বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াত নেতাদের জবাব, তাঁরা কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না এবং উপজেলা নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থনও দেননি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘দলীয় প্রার্থী এম এ মোতালেবকে বিজয়ী করার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। প্রচারণার জোয়ার দেখে বলা যায়, সবকিছু ঠিক থাকলে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকের বিজয় হবে সাতকানিয়ায়।’
প্রার্থী এম এ মোতালেব বলেন, ‘গতকাল সোমবার গণসংযোগ ও পথসভা করেছি। বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হলেও প্রচারণা থেমে যায়নি, প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।’
বিএনপি প্রার্থীর প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রচারণা চলছে। বৃষ্টি হলেও প্রচারণা অব্যাহত আছে।’ প্রচারণায় ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে জানান তিনি।