‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে মানববন্ধন, আয়োজকদের বাড়িতে ভাঙচুর

কিশোরগঞ্জে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বত্তরা। এতে এক মাদ্রাসাছাত্রীসহ তিনজন আহত হয়েছে। দুর্বৃত্তরা এ সময় চারটি গরু ও চার ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। দুটি পরিবারের ওপর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই আঙুর মিয়া ও তার দলবলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল এলাকাবাসী। এ নিয়ে আজ সকালে স্থানীয় ঝাউতলা বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে তারা। এতে রতনপুর গ্রামের দলমত নির্বিশেষে কয়েক হাজার মানুষ যোগ দেয়। বেলা ১১টার দিকে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে লোকজন মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সবুজ মিয়া, জাতীয় পার্টির নেতা ডা. লুৎফুর রহমান মেনু, স্থানীয় ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ এবং ছাত্রলীগ নেতা আরিফুজ্জামান জয়। বক্তারা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
এদিকে বক্তব্যের পালা শেষ হতে না হতেই খবর আসে, এই কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় মানববন্ধন শেষ করে লোকজন এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তদের হামলায় রতনপুর গ্রামের আবুল কালাম ভূঁইয়া ও আবু তালেব ভূঁইয়ার তিনটি ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তারাই উদ্যোগী হয়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল।
হামলার বিষয়ে আবুল কালাম ভূঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, এলাকার সব পুরুষ সন্ত্রাসীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঝাউতলা বাজারে গিয়েছিল। এ সুযোগে ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে ১৫-২০ জন লোক বাড়িতে ঢুকে রামদা, ছুরি, রড দিয়ে তাণ্ডব চালায়।
সন্ত্রাসীদের হামলায় তখন আহত হন জুয়েল (২০), ঝাউতলা মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী শাহানা (১৩) ও আকলিমা বেগম (২৫)। তাঁদের করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ ও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করার বিষয়টি জানানোর পরও বিকেল পর্যন্ত কোনো পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র মজুমদার বলেন, প্রকৃতপক্ষে ওই এলাকায় কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নেই। এটি মূলত গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব-সংঘাত। আর এ কারণেই এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে। তবে অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।