কাল রিভিউ আবেদন করবেন কামারুজ্জামান
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান তাঁর আইনজীবীদের মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় রিভিউর আবেদন করতে বলেছেন। আজ বুধবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আইনজীবীরা এ কথা জানিয়েছেন। আগামীকাল তাঁর পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হবে।
আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচজন আইনজীবী কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁরা বের হন।
কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারী অন্য আইনজীবীরা হলেন শিশির মনির, এহসান এ সিদ্দিক, মশিউল আলম ও এম রহমান আকন্দ।
আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, তিনি (কামারুজ্জামান) রিভিউ আবেদন করতে বলেছেন। আগামীকাল সকালে রিভিউ আবেদন করা হবে। তিনি আশা করছেন, এই রিভিউর শুনানি অন্যান্য মামলার রিভিউর শুনানির মতোই স্বাভাবিক গতিতে চলবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল জানান, কামারুজ্জামান সুস্থ্ এবং মানসিকভাবে অত্যন্ত দৃঢ় রয়েছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়নি। রিভিউর পর এটি বিবেচনায় আসবে।
তাজুল ইসলাম আরো জানান, কামারুজ্জামান রায়ের কপি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়েছেন এবং তিনি বলেছেন, একজন বিচারক বিবাদীর (ডিফেন্স) সাক্ষ্য-প্রমাণ বিবেচনায় নিয়েছেন। কিন্তু বাকি দুজন বিচারক তা বিবেচনায় নেননি বলে এ ধরনের রায় এসেছে। তিনি আরো বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ১০০ শতাংশ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাঁর প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
গত বছরের ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর তিন বিচারক হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ বেঞ্চের বিচারকরা সই করেন। পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়।
রায় প্রকাশের পর কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। লাল কাপড়ে মোড়ানো এ পরোয়ানার সঙ্গে কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপিও পাঠান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আসামিপক্ষের রিভিউ আবেদনের সুযোগ রয়েছে।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ওই বছরের ৬ জুন ওই সাজা বাতিল করে খালাস চেয়ে কামারুজ্জামান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো আপিল দাখিল করেনি। আসামিপক্ষের শুনানির বিপরীতে বক্তব্য পেশ করে রাষ্ট্রপক্ষ। ট্রাইব্যুনালের দণ্ড বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।