ভৈরবে সাবেক ও বর্তমানের লড়াই!

আসন্ন ভৈরব পৌরসভা নির্বাচনে জমে উঠছে সাবেক ও বর্তমান দুই মেয়রের লড়াই। দুজনেই মেয়র থাকাকালীন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ভোটারদের প্রত্যাশা, দল-মতের ঊর্ধ্বে তাঁরা একজন সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পৌরপিতা হিসেবে নির্বাচিত করা।
ব্রিটিশ আমল থেকে দেশের প্রসিদ্ধ নদীবন্দর ও বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে ভৈরবের সুখ্যাতি রয়েছে। পুরোনো ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ভৈরব পৌরসভাকে ১৯৯১ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করে। ভৈরব পৌরসভার বর্তমান মোট ভোটার ৬৭ হাজার ৪৩৬। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে দলের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এ সময় ভৈরবে ব্যাপক উন্নয়ন হয়।
তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পরও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে।
ভৈরব পৌরসভা নির্বাচনে এবার স্বতন্ত্র দুজনসহ মেয়র পদে চারজন, সাধারণ কাউন্সিলর ৫৯ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আসনে ১৪ জন ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। ভোটারদের আশা, মূলত লড়াইটা জমে উঠবে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী ফখরুল আলম আর বিএনপিদলীয় প্রার্থী হাজি মো. শাহীনের মধ্যে।
ফখরুল আলম ১৯৯৯ থেকে ২০১১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পরপর দুবার নির্বাচিত ভৈরব পৌরসভার মেয়র ছিলেন। তাঁর দায়িত্ব পালনকালে নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এবার তিনি ভোটারের মন জয়ে নেমেছেন। দলীয় প্রতীক নৌকা এবং বিগত দিনের উন্নয়ন—এ দুইয়ের ওপর ভর করে তিনি এবারও পৌর মেয়র পদে জয়ের বিষয়ে আশবাদ ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে ফখরুল আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি ভৈরবকে একটি আধুনিক ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বিগত দিনের কাজের মূল্যায়ন করেই ভোটাররা আবারো আমাকে জয়ী করবেন, এটাই আমার বিশ্বাস।’
বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিন মেয়র প্রার্থীকে পেছনে ফেলে এবং বিএনপিদলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভৈরব পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় উঠে আসেন ব্যবসায়ী হাজি মো. শাহীন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। এবার দলের অন্য কেউ মনোনয়নযুদ্ধে না নামায় একক প্রার্থী হিসেবে তিনি ধানের শীষের কাণ্ডারি হিসেবে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।
হাজি মো. শাহীন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমি মানুষের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। এটা মানুষ জানে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে এবং ভোটাররা ভোট দিতে পারলে আমি আবারো বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো।’
সাবেক ও বর্তমান মেয়র প্রার্থীর ভোটযুদ্ধ উপভোগ করতে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন ভৈরব পৌরবাসী। আগামী ৩০ ডিসেম্বর উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাঁদের এ অপেক্ষার শেষ হবে বলে আশাবাদী ভৈরববাসী।