পদ্মা সেতু : জাজিরায় খুশির জোয়ার
পদ্মা সেতুর নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করতে শনিবার শরীয়তপুরের জাজিরায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য জাজিরাবাসীর মধ্যে বইছে খুশির জোয়ার। চোখেমুখে বইছে হাসির ঝিলিক।
urgentPhoto
সেতুর ওপর দিয়ে গাড়িতে চড়ে রাজধানীতে যাওয়ার স্বপ্নপূরণে আরো এক ধাপ এখন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। দেশের বৃহত্তম এই অবকাঠামো নির্মাণ করতে পদ্মাপারের মানুষকে ছেড়ে দিতে হয়েছে পৈতৃক ভিটা ও বসতবাড়ি। তারপরও কোনো দুঃখ নেই তাঁদের মনে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে এরই মধ্যে তোরণ-ফেস্টুন দিয়ে অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে পদ্মার পাড়।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সেতু কর্তৃপক্ষ আয়োজিত সুধী সমাবেশে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন। সুধী সমাবেশ শেষে পদ্মা সেতুর পাইলিং কাজের উদ্বোধন করতে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় যাবেন তিনি।
শুক্রবার পদ্মা সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফেস্টুন-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পদ্মার পার। অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে পুরো এলাকা। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে দলীয় নেতা-কর্মীরা একাধিক তোরণ সাজিয়েছেন পদ্মা সেতু এলাকাজুড়ে। ফেস্টুন আর ব্যানারে নতুন রূপ পেয়েছে পদ্মার পার। এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দেখা হয় জাজিরার নওডোবা গ্রামের গৃহবধূ হাসিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি ঘুরে ঘুরে সেতু এলাকা দেখছেন। তাঁর চোখেমুখে হাসির ঝিলিক। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। গৃহবধূ হাসিনা আঙুল দেখিয়ে বলেন, ‘এইডা আমাগো বাড়ি আছিল। পদ্মা সেতুর নাইগা (জন্য) দিয়া দিছি। আমাগরে শেখের বেডি টাহা পয়সা (টাকা পয়সা) দিয়া দিছে। অহন হেয় (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আইবো, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবো। আমার যে কত ভালো লাগতাছে...। আপনেরে কেমনে বুঝাইমু। আমাগো মাইয়া আমাগো দেশে আইবো।’
পূর্ব নাওডোবা গ্রামের মোখলেছ মাদবর বলেন, ‘আমাদের জমিজমা গেছে তাতে কোনো দুঃখ নেই। পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। আমাদের সব দুঃখ-কষ্ট বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এখন শুধু অপেক্ষায় আছি কবে গাড়িতে চড়ে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় যাব।’
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জাজিরায় প্রস্তুতির পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সেতুর কাজ সম্পন্ন করা হবে। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। সার্বিকভাবে সেতুর ২৭ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। সেতুটি নির্মাণ হলে পদ্মাপারের মানুষসহ দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে।