প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সনদ আটকে রাখার অভিযোগ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/12/15/photo-1450157661.jpg)
ডেসটিনি ২০০০-এর ফাঁদে পড়ে লোকসান হয়েছে ১২ হাজার টাকা। আর সেই টাকা আদায় করে নিতে ছাত্রীর এসএসসি পাশের মূল সনদপত্র আটকে রেখেছেন নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার খগা বড়বাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. মারুফা বেগম লিজা। ছাত্রীর কাছে দাবি করছেন ৫০ হাজার টাকা।
হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর নাম লতিফা আক্তার। তিনি ওই স্কুল থেকে ২০১০ সালে মাধ্যমিক (এসএসসি) পাস করেন। কিন্তু মূল সনদপত্র এত বছর আটকে রাখায় শিক্ষা এবং চাকরির সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন লতিফা।
ভুক্তভোগী লতিফা আক্তার বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ডেসটিনি ২০০০-এর সদস্য হই। এ সময় আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ডেসটিনির সদস্য হলে তাঁর ১২ হাজার টাকা লোকসান হয়। সে সময় আমার ও পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়। পরবর্তী সময়ে ডেসটিনি বন্ধ হয়ে গেলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। অথচ প্রধান শিক্ষিকার ১২ হাজার টাকা লোকসান হলে অনৈতিকভাবে সেই টাকার দায় আমার ঘাড়ে চাপিয়ে এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট আটকে দেন। আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি কোথায় পাব এত টাকা।’
প্রধান শিক্ষিকা কর্তৃক হয়রানির শিকার ছাত্রী লতিফা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি ২০১০ সালে এসএসসি পাস করি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সার্টিফিকেট উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করলেও সার্টিফিকেট তুলতে পারিনি। প্রধান শিক্ষিকা আমার কাছে বারবার একই দাবি করে আসছেন। আমি দিতে অস্বীকার করায় তিনি আমাকে সার্টিফিকেট না দিয়ে হয়রানি করছেন।’
জানা যায়, বন্দর খড়িবাড়ী গ্রামের মো. আব্দুল লতিফ ও আছিয়া বেগমের একমাত্র মেয়ে লতিফা ওই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করলেও সার্টিফিকেট তুলতে পারছেন না প্রভাবশালী এই প্রধান শিক্ষিকার কাছ থেকে। ছাত্রী লতিফা আক্তারের জন্ম তারিখ-০২.০৯.১৯৯৫ ইং, সার্টিফিকেট সিরিয়াল নম্বর ডিবিএস-১০০০৭৯৬৪২, বোর্ড-দিনাজপুর, গ্রুপ-মানবিক, সেশন-২০০৯-১০, রেজি- নম্বর-৬২১৯৬৬ এবং প্রতিষ্ঠান কোড-৬৭১২। প্রধান শিক্ষিকা মারুফা বেগম স্কুলছাত্রী লতিফা খাতুনের মাধ্যমেই ডেসটিনি ২০০০-এর সদস্য হয়েছিলেন।
ছাত্রীর মা আছিয়া বেগম বলেন, “সার্টিফিকেট না দিয়ে উল্টো আমাকে ও আমার মেয়েকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দেন। বলেন, ‘কীভাবে সার্টিফিকেট আমার কাছ থেকে নেও আমি তা দেখব। প্রয়োজনে লতিফার সার্টিফিকেট ছিড়ে বা পুড়ে ফেলব, তবু সার্টিফিকেট দেব না।’”
গত বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মারুফা বেগম লিজার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই ছাত্রীর সাথে আমার অনেক বোঝাপড়া আছে। আমার খোয়া যাওয়া ৫০ হাজার টাকা কে দেবে? তাই ওই টাকা ছাড়া সার্টিফিকেট দিতে পারব না। আপনাদের যা করার আছে করেন।’
এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলব। তবে সার্টিফিকেট দেবেন কি না এটা বলতে পারব না। তবে এভাবে সার্টিফিকেট আটকানোর কোনো নিয়ম নেই।’