সংসদে উঠল সর্বাধিনায়কতা আইন

সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোর সর্বাধিনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের বিধানসংবলিত আইন সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে বিলটি উত্থাপিত হয়।
‘প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ (সর্বাধিনায়কতা) আইন ২০১৬’ শীর্ষক বিলটি সংসদের বিবেচনার জন্য উত্থাপন করেন সংসদকার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণসংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধনী) আইন ২০১১ দ্বারা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জারীকৃত অধ্যাদেশগুলো কার্যকারিতা হারায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিস (সুপ্রিম কমান্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ অধ্যাদেশটি (১৯৭৯ সালের ১নং আইন) আদালত কর্তৃক বিলুপ্ত হওয়া সময়ের মধ্যে জারীকৃত। ‘অধ্যাদেশটির অধীন বিধানসমূহের কার্যকারিতা জনস্বার্থে বহাল ও অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে নতুন আইন করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিল প্রণয়ন করা হয়েছে। বিলটি আইনে রূপান্তরিত হলে রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়ক হবেন এবং তিনি তাঁর ওপর ন্যস্ত প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের প্রধানগণের মাধ্যমে প্রয়োগ করবেন। কার্যকারিতা হারানো অধ্যাদেশটির স্থলে এ-সংক্রান্ত নতুন আইনের খসড়া বিল মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে রাষ্ট্রের কাছে প্রতীয়মান হয়, প্রজাতন্ত্রের কর্মের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন জনগণের অর্জিত অধিকার সংরক্ষণ এবং বহাল ও অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য জনস্বার্থে অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা প্রদান আবশ্যক। তাই আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট আইনি শূন্যতা সমাধানকল্পে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেন। পরে সংবিধানের ৯৩(২) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা পূরণকল্পে বাতিল-ঘোষিত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরণ (বিশেষ বিধান) আইন ২০১৩ প্রণীত হয়।
আইনের ৩ ধারায় বলা হয়, ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিস (সুপ্রিম কমান্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ অধ্যাদেশটি এতদ্বারা উল্লেখিত ও রহিত করা হলো। তবে রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত অধ্যাদেশের অধীন কৃত কাজকর্ম, গৃহীত ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এ আইনের অধীন বলে গণ্য হবে। এ ছাড়া কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকলে, তা এমনভাবে নিষ্পন্ন হবে যেন এ আইনের অধীন গৃহীত হয়েছে।’
আইনের দুই ধারায় বলা হয়, রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোর সর্বাধিনায়ক হবেন এবং তিনি সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে তাঁর ওপর ন্যস্ত প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোর সর্বাধিনায়কতা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোর প্রধানদের মাধ্যমে প্রয়োগ করবেন। রাষ্ট্রপতির সাধারণ নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোর প্রধানরা তাঁদের অধীন বাহিনীর ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।