এবার সালাহ উদ্দিনকে ফেরতের দাবিতে হরতাল
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে অবিলম্বে তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবিতে এবার চলমান হরতাল ৪৮ ঘণ্টা বাড়াল ২০ দলীয় জোট। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ, শুক্রবার দেশের সব মসজিদে দোওয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ২০ দলীয় জোটের পক্ষে বিএনপির আরেক যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলুর সই করা এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী অবরোধের পাশাপাশি হরতাল পালন করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিএনপির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পর সাতদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাঁকে মুক্তি দেওয়া কিংবা আদালতে হাজির করা হয়নি। সালাহউদ্দিনকে গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে সাজানো গল্প ফাঁদা হয়েছে এবং শীর্ষ পর্যায় থেকে উৎকট ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা হয়েছে। এতে তাঁর পরিবারের এবং আমাদের উৎকণ্ঠা তীব্র হচ্ছে।’
বিবৃতিতে বরকত উল্লাহ বুলু আরো বলেন, ‘সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থাপন করার কথা আমরা বলেছি। কিন্তু তাঁর মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাকে উধাও করে ফেলার মতো ধৃষ্টতাকে কোনো ক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা সবার জন্য অনিরাপদ এক অসভ্য পরিবেশেই কেবল সম্ভব। এর প্রতিবাদে এবং অনতিবিলম্বে সালাহ উদ্দিনকে তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবিতে আমরা ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী অবরোধের পাশাপাশি ৪৮ ঘাণ্টার হরতাল আহ্বান করছি।’
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সারা দেশে ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া হরতাল শেষে শুক্রবার সারা দেশে সালাহ উদ্দিন আহমেদের জন্য দেশের সব মসজিদে দোয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা করতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি বিবৃতিতে অনুলোধ জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন করতে এবং জনগণের ভোটের অধিকারসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে ২০ দলীয় জোটের প্রধান খালেদা জিয়া আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ছাড়া সিভিল সমাজ, পেশাজীবীরাসহ দেশের প্রায় সব গণতান্ত্রিক মহল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আলোচনার পথে সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে।
‘কিন্তু সরকার এসব আহ্বানে সাড়া দেয়নি’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভোটারবিহীন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনি প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা করায়ত্ত্বকারী সরকার কোনো আহ্বানেই সাড়া দেয়নি। বরং তারা হত্যা, গুম, অপহরণ, জুলুম-নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সৃষ্টি করা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি অব্যাহত রেখে তথাকথিত উন্নয়নের ধারার নামে তাদের অবৈধ শাসন এবং লুটপাট ও দুর্নীতির ধারাকেই প্রলম্বিত করতে চাইছে।’
‘এমনকি এসব ঘটনার আসল চিত্র সংবাদ-মাধ্যমে তুলে ধরার সুযোগও সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে’ বলে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিরোধী দলের বিরুদ্ধে একটানা মিথ্যাচার করে চলেছে বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়। এ অবস্থায় দেশব্যাপী অবরোধের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া ২০ দলের সামনে আর কোনো পথ খোলা রাখা হয়নি বলেও জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মী ছাড়াও সব গণতান্ত্রিক ব্যক্তি ও শক্তিসহ দেশবাসীর প্রতি ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান জানান বরকত উল্লাহ বুলু।