ভারত থেকে আসল বেশি খরচের ডিজেল
মধ্যপ্রাচ্য বা পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে যে খরচে ডিজেল আনা হয়, তার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি খরচে ভারত থেকে ডিজেল এসেছে। ভারতের দুই হাজার ২০০ টন ডিজেলবাহী একটি ট্রেন আজ শনিবার সকাল ৬টার দিকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলস্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছেছে। পরে দুপুর ১২টার দিকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ট্রেনটির ফিতা কেটে স্বাগত জানানো হয়।
ভারতের ট্রেনকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জ্বালানি পণ্য সংরক্ষণাগার পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপোতে এক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, বিপিসির চেয়ারম্যান মাহমুদ রেজা খান প্রমুখ।
ভারত থেকে তেলবাহী ট্রেন আসার মাধ্যমে জ্বালানির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি বিশাল দিক উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘আগামী তিন বছর পর ভারত থেকে পাইপে আসবে তেল। ভারতের নুমালীগড় থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে পাইপের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। এটি একটি পাইলট প্রজেক্ট।’
গতকাল বিপিসির একটি সূত্র জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে আমদানি করা দুই হাজার ২০০ টন ডিজেল নিয়ে একটি ট্রেন বাংলাদেশের পার্বতীপুরে আগামীকাল (আজ) শনিবার আসবে।
বিপিসির সূত্রটি আরো জানায়, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এই ডিজেলের প্রতি ব্যারেলের জন্য পরিবহন খরচ, ইন্স্যুরেন্স বাবদ রাখছে সাত ডলার। অথচ কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, চীন, ফিলিপাইন, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া বা ব্রুনাই থেকে এই তেল আনতে খরচ পড়ে ৪ দশমিক ৪ ডলার। টেন্ডারের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি করলে অনেক সময় আরো কম দাম পড়ে।
বাংলাদেশের উদ্দেশে গত বৃহস্পতিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে ৪২টি ট্যাংকারে ডিজেল নিয়ে ট্রেনটি রওনা দেয়। ভারতের জ্বালানি ও প্রকৃতিক গ্যাসসম্পদ মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের উপস্থিতে ট্রেনটি যাত্রা করে।
গত বছরের এপ্রিলে ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অংশ হিসেবে এ ডিজেল পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।
চুক্তি অনুযায়ী এনআরএলের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে বিপিসির পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপো পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফএল) স্থাপন করা হবে। পাইপলাইন স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপোতে রেলপথেই জ্বালানি তেল নিয়ে আসা হবে বলে জানা গেছে।