তনু হত্যার দ্রুত বিচার দাবি বাবা-মায়ের
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন তাঁর বাবা ও মা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ভেতরে নিজেদের বাসায় তাঁরা এ দাবি করেন।
কাঁদতে কাঁদতে মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সরকারের কাছে আমার মেয়ে হত্যার দ্রুত বিচার চাই। আমার মেয়েরে এত কষ্ট কইর্যা পালসি। মেয়েরে যে মাইর্যা হালাইব, আমি জানি না। আমার মেয়ে ঘরতে হাসতে হাসতে বাইর হয়্যা গেছে। আমি দ্রুত বিচার চাই, সরকারের কাছে, দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘সিআইডি যে রিপোর্ট দিছে, ওই রিপোর্টে আমরা একমত পোষণ করি। এ মুহূর্তে আমি প্রত্যাশা করতে চাই, তারা যে রিপোর্টটা দিছে, যে-ই হোক তাদের ধরা এবং আইনের আওতায় আনা হবে।’
এদিকে, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, তনুর মৃতদেহে মোট চারজনের ডিএনএ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি তনুর নিজের। অন্য তিনটি তিনজন পুরুষের। তনুর প্যান্টি, কাপড়, শরীরের অংশবিশেষ ও ডিএনএ প্রতিবেদনে তিন ব্যক্তির শুক্রাণু বীর্য পাওয়া গেছে। প্যান্টিতে লেগে থাকা রক্ত তনুর বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকার সিআইডির পরীক্ষাগারে ডিএনএ প্রতিবেদনে এ আলামত পাওয়া যায়। সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান গতকাল সোমবার রাতে এ বিষয়ে কথা বলেন।
ড. নাজমুল বলেন, ‘আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে তনুর মরদেহে থাকা কাপড়-চোপড় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠাই। ডিএনএ প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে। এখন যত দ্রুত দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, ততই এ মামলার অগ্রগতি দেশবাসীকে দেখানো যাবে বলেও আশা করছি।’
গত ২০ মার্চ সন্ধ্যায় টিউশনির জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তনু। পরে বাসায় ফিরে না আসায় তাঁকে খোঁজাখুঁজি করেন পরিবারের সদস্যরা। রাতে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন কালভার্টের পাশে ঝোপে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তনুর মৃতদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, তনুর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।