কুড়িগ্রামে ৩০ হাজার মানুষের পানিবন্দি জীবন
বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
নদের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে আশপাশের এলাকার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন।
গবাদি পশু নিয়ে উঁচু বাঁধ ও পাকা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন এসব এলাকার মানুষ। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ।
পানি বৃদ্ধির ফলে রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী ও সদর উপজেলার অর্ধশতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়ে গেছে।
চিলমারী উপজেলার ফেসকার চরের বাসিন্দা আকবর আলী জানান, তিনদিন ধরে বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে আছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভীষণ কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে।
একই চরের আরেক বাসিন্দা শ্রমজীবী ছবুর আলী জানান, পানির কারণে চরের মানুষ এবার ঈদ পালন করতে পারেনি। হাতে কোনো কাজও নেই।
এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, তাঁর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকা ও চরের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়নি। সরকারসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত বন্যার্তদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তাই তাঁদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নুনখাওয়া পয়েন্টেও দুধকুমার নদের পানি আট সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আশপাশের এলাকাগুলো তলিয়ে গেছে।