স্থানীয়রা বলছেন নিব্রাস ছিলেন, পুলিশ নিশ্চিত নয়
ঝিনাইদহের একটি বাড়িতে জঙ্গি নিব্রাস ইসলামের চার মাস ভাড়া থাকার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। তবে স্থানীয় লোকজন বলছেন তাঁরা নিব্রাসকে দেখেছেন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলাকারী নিহত জঙ্গি নিব্রাস ইসলাম ঝিনাইদহ জেলা শহরের খোন্দকারপাড়ার একটি বাড়িতে চার মাস ভাড়া ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরো সাতজন। নিব্রাস সেখানে ‘সাঈদ’ নাম নিয়ে থাকতেন। স্থানীয়দের তিনি বলেছিলেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য সেখানে এসেছেন। স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে তিনি খেলাধুলাও করতেন।
গুলশান হামলার পর নিব্রাসের ছবি দেখে স্থানীয়রা তাঁকে শনাক্ত করেন। যে বাড়িতে নিব্রাস থাকতেন সেই বাড়ির মালিক কাওছার আলীর পরিবারও এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে পুলিশ এখনো মানতে নারাজ। পুলিশের মতে, গণমাধ্যম এ ধরনের খবর প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে জানান, জঙ্গি ওই বাড়িতে ছিল এমন কোনো তথ্য এখনো তাঁদের কাছে আসেনি। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাড়ির মালিকসহ পাঁচজনকে আটকের প্রকৃত কোনো তথ্যও তাঁর কাছে নেই।
ঝিনাইদহ সদর থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেছেন, নিব্রাস ঝিনাইদহ শহরের ওই বাড়িতে ছিলেন, এ খবর যেমন নিশ্চিত নয়, তেমনি বাড়িটিকে জঙ্গি আস্তানা হিসেবেও চিহ্নিত করা সঠিক হবে না। তবে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরে ওই বাড়িটির প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঝিনাইদহ জেলা শহরের হামদহের সোনালীপাড়ার কাওছার আলীর বাড়িতে দুজন নারী ছাড়া আর কেউ নেই। ঘরের দরজাই খুলছেন না তাঁরা। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কাওছার আলীর স্ত্রী বিলকিস নাহার। তাঁর বড় ছেলের বউ জুলি দরজার ফাঁক দিয়ে জানান, সংবাদকর্মীদের সঙ্গে তাঁরা কোনো কথা বলবেন না।
স্বজন ও স্থানীয় লোকজন জানান, গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর কাওছার আলীর বাড়িতে ঈদের আগের দিন রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায় এবং কাওছার আলী, তাঁর দুই ছেলেসহ পাঁচজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন বলে পাশের মসজিদের ইমাম হাফেজ রোকনুজ্জামানের মাধ্যমে কাওছার আলী বাড়িতে ওঠেন নিব্রাসসহ আটজন। রোকনুজ্জামান থাকতেন মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে।
শুক্রবারও প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত জঙ্গি নিব্রাস ওরফে সাঈদের ছবি দেখে শনাক্ত করেছেন। অনেকেই বলছেন, প্রতিদিন সকাল ৮টার দিকে লাল রঙের একটি মোটরসাইকেলে নিব্রাসকে বাইরে যেতে দেখত তারা। ঈদের কয়েক দিন আগে ভাড়াটিয়ারা বাড়ি ছেড়ে চলে যায় বলে জানান বাড়ির মালিকের স্ত্রী বিলকিস নাহার। সাঈদকে ওই বাড়ির পাশের ছোট মাঠে খেলাধুলা করতে দেখেছেন প্রতিবেশী জনৈক ব্যাংক কর্মকর্তা। সাঈদই নিহত জঙ্গি নিব্রাস ইসলাম বলেও জানান তিনি।