শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্বে শেরপুরে বাস চলাচল বিঘ্নিত
শ্রমিক ও মালিকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে শেরপুরের যাত্রী পরিবহন খাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর জের ধরে গত শুক্র ও শনিবার শেরপুর-ঢাকা সড়কে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। আজ রোববার এক টার্মিনাল থেকে বাস ছেড়ে গেলেও আরেকটি টার্মিনাল থেকে আন্তজেলা সড়কের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আজ রোববার সকালে শেরপুরের নবীনগর আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ডসহ আরো দুটি সার্ভিসের বেশ কিছু বাস চলাচল শুরু করলেও জামালপুর বাস টার্মিনাল থেকে সোনার বাংলা পরিবহনের কোনো বাস ছাড়েনি।
গত ১৪ মে নারায়ণগঞ্জগামী একটি বাস চালানোর সময় চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। পরে এই দ্বন্দ্ব শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতি উভয় সংগঠনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বাস-কোচ মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার রাতে নবীনগর ড্রিমল্যান্ড বাস টার্মিনালে শ্রমিক মালিকদের একটি অংশ সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে আন্তজেলা রুটের সব গাড়ি নবীনগর বাস টার্মিনাল থেকে চলাচল করার দাবি জানানো হয়। এ দাবিতে পরদিন শনিবার দুপুরে নবীনগর টার্মিনাল থেকে শ্রমিকরা একটি মিছিল বের করেন এবং তাঁদের দাবির পক্ষে জাতীয় সংসদের হুইপ ও শেরপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য আতিউর রহমান আতিকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। শ্রমিক নেতারা দাবি করেন, হুইপ আতিউর রহমান আতিক বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর বাস-কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম স্বপন জানান, সমস্যাটি মূলত শেরপুর বাস-কোচ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার কারণে উদ্ভূত হয়েছে। তার ওপর সব শ্রমিক অসন্তুষ্ট। তাঁর চাঁদাবাজির কারণে বাস মালিক ও শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাপারটি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। প্রশাসন, মালিক, শ্রমিক সবাই একযোগে চেষ্টা করছে সমাধানের।’
এদিকে শেরপুর বাস-কোচ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে মালিক সমিতির করা সব অভিযোগ মিথ্যা।’ গাড়ি চলাচল বন্ধ প্রসঙ্গে এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘শুধু সোনার বাংলা সার্ভিসের গাড়ি বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ড্রিমল্যান্ড, প্রভাতী ও তুরাগ সার্ভিসের গাড়িগুলো যথারীতি চলাচল করছে।’
আজ সকালে নবীনগর বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড স্পেশালসহ বিভিন্ন সার্ভিসের বেশ কয়েকটি বাস ছেড়ে গেছে। এ ব্যাপারে বাস-কোচ শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি হামিদুর রহমান বলেন, ‘নবীনগর বাস টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল করছে। এখান থেকে বাস চলাচলে কোনো সমস্যা নেই।’ তবে হামিদুর রহমানসহ নবীনগর টার্মিনালকেন্দ্রিক শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করেন, ‘ময়মনসিংহ ও গাজীপুরের মালিক সমিতির লোকজন শেরপুর-নবীনগর টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া কোনো কোনো বাস আটকে দিচ্ছে।’
শেরপুরের বাস মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হওয়ার কারণে সাধারণ যাত্রীদের ভীষণ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।