রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে ইইউ : গিলমোর
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান চায়। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাশন হতে হবে মর্যাদাপূর্ণ এবং নিরাপদ। রোহিঙ্গা সংকট আসলেই একটি জটিল সমস্যা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমারের উপর চাপ রেখে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সাথে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহ ছাড়াও প্রভাবশালী দেশ সমুহের সাথে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইমন গিলমোর এসব কথা বলেন।
গিলমোর জানান, ইতোমধ্যে মিয়ানমারে সামরিক জান্তার উপর কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। মিয়ানমারে গনতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমার সামরিক জান্তার চাপ দিয়ে আসছে।
ইমন গিলমোর জানান, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বোঝা বাংলাদেশ বহন করে আসছে এবং বাংলাদেশের মানুষ মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। এজন্য বাংলাদেশ ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। গত ছয় বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নসহ তাদের সহায়তায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
গিলমোর আরও জানান, তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। রোহিঙ্গারা তাকে বলেছে, ক্যাম্পে খাদ্য ও শিক্ষাসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। এ সংকটের মধ্যেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমোন গিলমোরসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছার পর সরাসরি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। তার নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দলটির গাড়ি বহর উখিয়ার কুতুপালং ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায়। গিলমোর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে ওই ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআর পরিচালিত রোহিঙ্গাদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম, ইউনিসেফ পরিচালিত রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করে।
ইমোন গিলমোরসহ ইইউয়ের প্রতিনিধিরা ইউএনএইচসিআরের কমিউনিটি সেন্টারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সবশেষে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম পরিচালিত রোহিঙ্গাদের কালচারাল সেন্টার পরিদর্শনের পর দুপুরে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশে রওনা দেয় ইইউর এই প্রতিনিধি দল।