মুঠোফোনে প্রেম, পালিয়ে এসে দৃষ্টিহীন প্রেমিককেই বিয়ে
দুই সন্তানের জননী গার্মেন্টেসকর্মী রেবা আক্তার সুমি (২৬)। মোবাইল ফোনে মো. রাসেল (২৮) নামে এক যুবকের সঙ্গে হয় প্রেম। একপর্যায়ে তিনি প্রেমের টানে হাজির হন প্রেমিকের বাড়িতে। এসে দেখেন প্রেমিক দৃষ্টিহীন। অতঃপর ভাগ্যকে মেনে নিয়ে দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে নোয়াখালীর হাতিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
এই বিয়ের খবরে এলাকার লোকজন রাসেলদের বাড়িতে এসে ভিড় করছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দৃষ্টিহীন প্রেমিক মো. রাসেল উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে সুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রাসেলের বড় ভাই জামসেদ জানান, এ বিষয়ে তাঁরা আগে কিছুই জানতেন না। গত শনিবার হঠাৎ সুমি তাদের বাড়ি এসে হাজির হন। রাসেল দৃষ্টিহীন, তার সংসার চালানোর সক্ষমতা নেই। এসব বলার পরও রাসেলকে বিয়ে করবে বলে সিদ্ধান্তে অটল থাকেন সুমি। পরে দুজনকে নিয়ে আসা হয় হাতিয়া থানায়। থানা থেকে সুমির বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তার মা-বাবা কেউ সাড়া দেননি। সবশেষ গতকাল দুজনের সম্মতিতে বিয়ে হয়।
সুমি বলেন, ‘আমার দুটি সন্তান আছে। আগের স্বামী ট্রাকচালক। তার সঙ্গে দুই বছর আগে সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এসব জেনেও রাসেল তাঁকে বিয়ে করবেন বলে জানান। রাসেল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এটা আমি আগে জানতাম না। চোখে সমস্যা আছে বলে রাসেল আমাকে জানিয়েছেন। কিন্তু একেবারে দৃষ্টিহীন, এটা বলেননি। এখন যেহেতু চলে এসেছি, তাই ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে বিয়ে করলাম।’
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, ‘সুমির আগের স্বামীর সঙ্গে কিছু দিন আগে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর তিনি গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন। একপর্যায়ে মুঠোফোনে রাসেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।’
ওসি আরও বলেন, ‘সুমির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী তাঁর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা কেউ আসেননি। পরে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।’