কক্সবাজারের তরুণীকে পড়ালেখার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ
মার্কিন তরুণের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বাসায় আটকে রাখা কক্সবাজারের তরুণী সাজরিনা আফরিন আমিরাকে পড়ালেখা করতে সুযোগ দিতে বাবা-মাকে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী তরুণীকে নিয়ে আদালতে বাবা-মা হাজির হওয়ার পর তরুণী সাজরিনার বক্তব্য একান্তে শোনেন হাইকোর্ট। পরে রোববার (২৬ জানুয়ারি) ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
এর আগে, কক্সবাজারের এ তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় মার্কিন নাগরিক হারুন আসাদ মির্জার। পরে ওই তরুণীকে আটক রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তিনি। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ওই তরুণীকে উচ্চ আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ অনুযায়ী আজ ওই তরুণী হাইকোর্টে হাজির হন।
রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে কেন ওই তরুণীকে আদালতে হাজির করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ২৬ জানুয়ারি আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ওই তরুণীকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে তার বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হারুন আসাদ মির্জা চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এরপর হাইকোর্ট ওই তরুণীকে তার অভিভাবকসহ ২৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় আদালতে উপস্থিত করতে নির্দেশ দেন। কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়া কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি), সদর থানার ওসি এবং মেয়েটির অভিভাবকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ বলেন, ১৮ বছর বয়সী তরুণী বাংলাদেশি নাগরিক আর রিট আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক (২২)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় হয়। মেয়েটি কক্সবাজারে থাকতেন। পরিবারকে না জানিয়ে পড়াশোনার জন্য মেয়েটি গত ডিসেম্বরে ঢাকায় চলে আসেন। এ সময় ঢাকায় আসেন মার্কিন তরুণ আসাদ মির্জাও। তবে মেয়েটির সন্ধান পেতে তাঁর বাবা কক্সবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। পরবর্তীতে মেয়েটি তার বন্ধু আসাদ মির্জাকে নিয়ে ঢাকায় একটি বেসরকারি আইনি সহায়তাপ্রদানকারী সংস্থায় যান। সেখানে গত ১০ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের (মেয়েটি ও তার অভিভাবক) মধ্যে মধ্যস্থতা হয়। তবে মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত অনুসরণ না করে মেয়েটির বাবা তাকে নিয়ে কক্সবাজারে চলে যান। মেয়েটির বন্ধু (মার্কিন নাগরিক) গত মাসের শেষ দিকে জানতে পারেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই মেয়েটিকে তার বাবা বিভিন্ন ধরনের মানসিক ওষুধ সেবনে বাধ্য করেন। এ অবস্থার প্রতিকার পেতে হাইকোর্টে রিট করেন মেয়েটির বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আসাদ মির্জা।