কবর থেকে পাঁচ নারীর কঙ্কাল চুরি
‘আমি প্রতি শুক্রবার হলেই মায়ের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে দোয়া করতাম। দুর্বৃত্তরা আমার সেই সুযোগটুকু কেড়ে নিল। কবর থেকে আমার মায়ের কঙ্কাল চুরি করে মৃত্যুর চাইতেও গভীর ক্ষত তৈরি করে দিয়ে গেল তারা।’ এমন কথায় বিলাপ করছিলেন স্কুল শিক্ষিকা মাহমুদা খানম।
কবরের সামনে ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিলেন স্কুল শিক্ষিকা মাহমুদা খানম। দেড় বছর আগে মৃত মায়ের শোকটা আরও গভীর এবং কষ্টের হয়ে ফিরে আসায় তাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষাটাও হারিয়ে ফেলেছিলেন অনেকে।
শুধু মাহমুদা খানমের মা নন, এমন পাঁচ নারীর কঙ্কাল একরাতে চুরি হয়ে গেছে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের দরগারপাড় এলাকার গাজীর দরগা সরকারি কবরস্থান থেকে।
ওই কবরস্থানে পৃথকভাবে সমাহিত করা হতো নারীদের মরদেহ। আজ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে কয়েকটি কবরের মাটি খোঁড়া দেখতে পেয়ে হতবাক হয়ে যান স্থানীয়রা। গোর খোদককে ডাকাডাকি করেন। তিনি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার রাতের কোনো একটি সময় পাঁচটি কবরের মাটি খুঁড়ে চুরি হয়েছে কঙ্কাল। এ কথা ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রিয় স্বজনের কবর অক্ষত আছে কি-না দেখতে ওই কবরস্থানে ভিড় করেন অনেকে।
এর আগেও ২০২১ সালে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের রণস্থল জান্নাতুল বাকী কবরস্থান থেকে ১৬টি, ২০১৯ সালে আশুলিয়া ইউনিয়নের শ্রীখণ্ডীয়া এলাকার শ্রীখণ্ডীয়া কবরস্থান থেকে সাতটি ও ২০১৫ সালে পাথালিয়া ইউনিয়নের গকুলনগর কবরস্থান থেকে ১৩টি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, এসব ঘটনায় কেউ আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরবর্তীতে কারা এসব কবরস্থান থেকে কঙ্কাল উঠিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিক্রি করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসার সুমন চন্দ্র গাইন বলেন, ‘আমরা এখনও এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’