বিনা দোষে আমি ১৫ মাস জেল খাটলাম : খাদিজা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। র্দীঘ প্রায় ১৫ মাস কারাভোগ করার পর আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে মুক্তি পান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় জামিন পাওয়া এই শিক্ষার্থী।
কারাগার থেকে বের হয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে পুরোটাই অন্যায়। বিনা দোষে আমি প্রায় ১৫ মাস জেল খাটলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু আর এখন বলতে চাই না। বলার মতো মন-মানসিকতা আমার নেই।’
খাদিজা বলেন, ‘কারাগারে ভেতরে খুব বেশি ভালো ছিলাম না। নামাজ পড়ে, রোজা রেখে আর লেখাপড়া করে সময় কাটিয়েছি। আজকে আমার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা। তাই এখান থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেব।’
এর আগে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলসুপার মো. শাহজাহান মিয়া খাদিজার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খাদিজার জামিনের আদেশ গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে আজ ভোরে তাকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, ভোরের দিকে খাদিজার পরিবারের কোনো স্বজন না আসায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছিলেন না। পরে তার বোন আসলে সকাল ৯টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
আদেশের পরও কেন নির্দিষ্ট সময়ে মুক্তি পাননি খাদিজা, ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত
অনলাইনে সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় আলাদা মামলা করে পুলিশ। একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম। অন্যটির বাদী কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন।
২০২২ সালের মে মাসে পুলিশ দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাতুল কুবরাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। এরপর থেকে কারাগারে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন
জামিনে মুক্ত হলেন জবি শিক্ষার্থী খাদিজা
ওই মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুরের পর তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। পরে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। এ জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। গত ১৬ নভেম্বর জবি শিক্ষার্থীর জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।