মালয়েশিয়ায় ভবন ধসে নিহত সাইফুলের বাড়িতে শোকের মাতম
মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে নিহত সাইফুলের কুমিল্লার দেবিদ্বারের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে এ ভবন ধস ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। আদরের ছোট ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পাছেন না মা-বাবা।
সরকারের কাছে মা-বাবার চাওয়া একটাই, সন্তানের মরদেহটা যেন দ্রুত দেশে আসে। জীবিত সন্তানকে না পেলেও মরদেহটা নিজেদের কাছে এনে কবরস্থ করতে চান তাঁরা। একবারের জন্য হলেও মৃত ছেলের মুখটা দেখতে চান তাঁরা।
আজ বিকেলে নিহত সাইফুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকাবহ চিত্র। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে আছে বাড়িটির পরিবেশ। আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে বিলাপ করছেন মা আর তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবা।
গতকাল মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় পেনাং রাজ্যের একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে অপর দুই সহকর্মীর সঙ্গে মারা যান মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরের রোশন ভাণ্ডারীর ছোট ছেলে। এ ঘটনায় বেশ কজন আহত হন এবং চারজন ভবনের নিচে আটকা পড়েন।
নিহত সাইফুলের মা বলেন, ‘আমার কলিজার ধন আমাদের সুখের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রবাসে শ্রমিকের চাকরি করেছে। কত কষ্ট করেছে। আমাদের সুখের জন্য শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন বিসর্জন দিল। আমার কলিজার ধনের মুখটা শেষবার দেখতাম চাই। লাশটা আপনেরা আইন্না দেন।’
সাইফুলের বাবা রোশন ভাণ্ডারী জানান, তিনি দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছেন। গত সোমবারও তাঁর থেরাপির জন্য ২০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন সাইফুল। বুধবারে আরও টাকা পাঠাবেন জানিয়েছিলেন। এবার দেশে এলেই বিয়ে করার কথা ছিল।
এ বিষয়ে ফতেহাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘সাইফুলের সহকর্মীরা তাঁর মরদেহ দেশে পাঠাবার চেষ্টা করছে বলে জেনেছি। আমিও যোগাযোগ রাখছি। মরদেহ আনার জন্য সরকার সংশ্লিষ্টদের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। আশা রাখছি স্বজনরা দ্রুত মরদেহ পাবেন।’
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, ‘আমরা খবরটি শুনেছি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব, সব করা হবে।’