সাভারে নিহত বেড়ে ২৫
সাভারে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পুলিশের উপর্যুপরি গুলিতে আজ সোমবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিহতের সংঘ্যা বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে গেছেন সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ দেড় শতাধিক মানুষ। অন্যদিকে, ধামরাই থানায় আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিকেলে থানা থেকে পুলিশ কর্মকর্তারা পালিয়ে গেলে থানার সামনে বিভিন্ন যানবাহন ও ভবনে আগুন দেওয়া হয়। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
নিহতদের মধ্যে আটজন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ছয়জন গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, তিনজন সাভার নারী ও শিশু হাসপাতাল, দুজন হাবিব ক্লিনিক, একজন হ্যাপি ক্লিনিক এবং বাকি পাঁচজন ঘটনাস্থলে মারা যান বলে জানা গেছে। তবে সবার নাম পরিচয় জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, সাভার থানার দিকে অগ্রসরমান হাজারও জনতার মিছিলে পুলিশ উপর্যুপরি গুলি ছোঁড়ায় বেড়েই চলেছে নিহতদের সংখ্যা। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে আশুলিয়া থানার বাইপাইল থেকে সাভার থানা রোড পর্যন্ত। উন্মুক্ত জনতা আশুলিয়া থানার দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। সেখানেও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান মাছ ব্যবসায়ী রমজানসহ (৪০) দুজন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ ও ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুপুরে আন্দোলনকারীরা ঢাকার দিকে অগ্রসর হলে সাভার বাজারে বাসস্ট্যান্ডে সূচনা হয় সংঘর্ষের। তার আগে পরিস্থিতির বাছ বিচার না করেই কারফিউ ভঙ্গ করে বাইরে কেন? এই অপরাধে নির্বিচারে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। এতে গুলিবিদ্ধ হন মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিক সৈয়দ হাসিবুন্নবীসহ অর্ধশতাধিক। এদের মধ্যে এক তরুণীসহ আটজনের মৃত্যু হয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
একপর্যায়ে পুলিশ পিছু হটলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশ থানা রোডের পুলিশ হাউজিংয়ের বহুতল ভবনে আশ্রয় নিলে জনতা তাদের ঘিরে ফেলে। জনতাকে লক্ষ্য করে ভবনের ওপর থেকে গুলি ছোঁড়া হলে গুলির মুখেই জনতা ওই ভবনে উঠে পড়ে। এ সময় গুলিতে মারা যান আরও পাঁচজন। জনতার আরেকটি অংশ থানার অভিমুখে অগ্রসর হলে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
থানায় আক্রান্ত একাধিক পুলিশ সদস্য জানান, সেনাবাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। সেটা না পেয়ে এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে একটি ট্রাকে করে পালিয়ে যান সাভার মডেল থানার কর্মকর্তারা।
এদিকে, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আলম সমর, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকসহ সভাপতি নিজাম উদ্দিন আহমেদ টিপুর বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।