গ্রাম পুলিশকে ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে মামলা
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এক নারী গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এ মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার চাপারকোনা গ্রামের সুমুতুল্লাহর মেয়ে সীমা আক্তার (৩৫) ডোয়াইল ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত। ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের (৪৫) সহযোগী কামাল হোসেন (৫০) ভয়ভীতি দেখিয়ে তার স্বামী সুরুজ মিয়াকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। এরপর কামাল হোসেন ডোয়াইল বাজার এলাকায় তাঁকে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দেন। ভাড়া বাসায় তাঁকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেন কামাল হোসেন। কিন্তু বিয়ের জন্য সময় ক্ষেপণ করায় তিনি ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনকে বিষয়টি জানান। ঘটনাটি জানার পর ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন তাঁকে সরিষাবাড়ী পৌর শহরের শিমলা বাজার এলাকায় একটি ভবনের ৫ম তলায় যেতে বলেন। ওই ভাড়া বাসায় চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন তাঁর স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের অধীনে কর্মরত থাকায় তিনি ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখেন।
এদিকে গত ৫ মার্চ রাতে সীমা আক্তারের ভাড়া বাসায় গিয়ে পুনরায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগী কামাল। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন কামাল।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী জানান, এ ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে গিয়েও কোনো বিচার না পাওয়ায় গত ১৫ মার্চ বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সীমা আক্তার। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিন দিন পর সুস্থ হন। ন্যায্যবিচারের জন্য আজ বৃহস্পতিবার সরিষাবাড়ী উপজেলার মাজালিয়া গ্রামের কামাল হোসেন ও ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এ ধর্ষণ মামলা করেন গ্রাম পুলিশ সদস্য সীমা আক্তার।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী আরও জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অপর অভিযুক্ত কামাল হোসেন বলেন, ‘এসব আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। আমি কিছুই জানি না।’