ফরিদপুরে দুজনকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে : র্যাব
ফরিদপুরের মধুখালিতে দুই সহোদর ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাবের গোয়েন্দা শাখা। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে অচিরেই গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার নবনিযুক্ত পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত পরিচয়পর্ব ও মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার উপ-পরিচালক মেজর লুৎফুল হাদী, সিনিয়র সহকারী পরিচালক (এএসপি) আ ন ম ইমরান খান ও সহকারী পরিচালক আল আমিন। কমান্ডার আরাফাত ইসলাম গত বুধবার র্যাবের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সদ্য বিদায়ী পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরের পাশে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান ও ইউপি সদস্য অজিত কুমার বিশ্বাসকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার। তাদের গ্রেপ্তারে এলিট ফোর্স র্যাব কী ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে জানতে চাইলে র্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘র্যাবের ইনটেলিজেন্স উইং বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। দেশের যেকোনো জায়গায় যেকোনো প্রান্তে যেকোনো ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব ঘটনা নিয়ে কাজ করে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অংশ হিসেবে র্যাব এ ঘটনায় কাজ করছে। অচিরেই এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরের পাশে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে সাইবার জগতে। যারা অপচেষ্টা করছেন তাদের শনাক্ত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘একটা অপরাধ সংঘটনের পর অপচেষ্টা বা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। অপরাধী গ্রেপ্তার হলেই সব বেরিয়ে আসবে।’
সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট বারবার পেছানো হচ্ছে। বিষয়টি বিচারিক প্রক্রিয়াতেই যায়নি। এ ব্যাপারে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি চাঞ্চল্যকর ও তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।’
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে র্যাব কী ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে জানতে চাইলে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘সমগ্র দেশে চার পর্বে উপজেলা নির্বাচন হতে যাচ্ছে৷ একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য র্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও র্যাব সদস্যরা কাজ করছেন।’
কোন বিষয়টি কাজ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন জানতে চাইলে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন যে ঘটনাগুলো ঘটে থাকে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করি। আমার আগের যে কর্মকর্তারা কাজ করে গেছেন, ঊর্ধ্বতনরা যে লিগ্যাসি রেখে গেছেন সেটাই আমি বহন করব৷ র্যাবের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করব।’
গত দুই বছর দেশে ক্রসফায়ার নেই৷ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি খুব ভালো হয়ে গেছে নাকি অন্য কোনো চাপে ক্রসফায়ার হচ্ছে না- জানতে চাইলে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে এ পর্যায়ে কথা বলার কিছু নেই৷ র্যাব কেন, আত্মরক্ষার অধিকার সবার আছে। ক্রসফায়ার শব্দটি আমি ব্যবহার করতে চাই না। আমরা সব সময় চাই বিচারবহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ড না ঘটুক৷ যদিও বিভিন্ন সময় এটা নিয়ে ভিন্নখাতে আলোচনা হয়।’
কিশোর গ্যাং ও অস্ত্র মাদক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘মাদক নিয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। কিশোর গ্যাং নির্মূলে উচ্চপর্যায়ে নির্দেশনা পেয়েছি। আমরা কাজ করছি। প্রচুর কিশোর গ্যাং সদস্যকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এদের আশ্রয়প্রশ্রয় ও মদদদাতাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত করে এটা খুঁজে বের করা হবে। কিশোর গ্যাংকে আমরা সমূলে উৎখাত করব ইনশাআল্লাহ।’ এজন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতাও কামনা করেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
কুকি-চিনের তৎপরতা নির্মূলে র্যাব ও যৌথবাহিনীর অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘যৌথ বাহিনী কাজ করছে৷ র্যাব যৌথবাহিনীর অংশ। এটা নিয়ে কিছু বিষয়ে গোপনীয়তা রয়েছে অভিযানের স্বার্থে। এতোটুকু বলতে পারি, র্যাব এক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে।’