ভারতে এমপি আনার হত্যা, শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণ মামলা
ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করা হয়েছে। আজ বুধবার (২২ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশে অপহরণ করেছে এমন অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
সন্ধ্যায় শেরে-বাংলা নগর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে জানিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহাদ আলী বলেন, অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে (মামলা নম্বর ৪২)। এখন তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা গেছে, এমপি আনার সংসদ ভবন এলাকায় থাকতেন। সেখান থেকে তিনি ভারতে গেছেন। তাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান হারুন-অর-রশিদের পরামর্শে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে।
সীমান্ত এলাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আনোয়ারুল আজিম আনার। গত ১৯ মে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ বলেছিলেন, ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর ১৬ মে তার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে।
গত ১৯ মে ডিবি কার্যালয়েও যান আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘তিনদিন ধরে আমার বাবাকে ফোনে পাচ্ছি না। তার মোবাইল ফোনটি মাঝে মাঝে খোলা পাই আবার মাঝে মাঝে বন্ধ পাই। পরে এই বিষয়ে আমি ডিবি প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে বলেছেন বিষয়টি তিনি দেখছেন। পরে আজকে আমি ওনার কার্যালয়ে আসি। তিনি আমাদের সহযোগিতা করছেন। বাবাকে ফোনে না পাওয়ার কারণেই মূলত আমি ডিবি কার্যালয়ে এসেছি। আমি নিজেও ভারতে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাব।’
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, ‘ঝিনাইদহের এমপি (আনোয়ারুল আজীম আনার) আমাদের ইমিগ্রেশন ও ভারতের ইমিগ্রেশন যথাযথভাবে পার হয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার পরে তার কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না। সব গভর্নমেন্ট এজেন্সি এটা নিয়ে কাজ করছে। এনএসআই, এসবি, পুলিশ কাজ করছে। ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে এটা নিয়ে কাজ চলছে।’
কলকাতার নিউটাউনের বিলাসবহুল কনডোমিনিয়ামের একটি ফ্ল্যাটে পুলিশ অনুসন্ধান চালাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ওই ফ্ল্যাটে এমপি আনার গত ১৩ মে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ওই ফ্ল্যাটে হত্যার কোনো আলামত পাওয়া গেছে কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির মহাপরিদর্শক (আইজি) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, আমাদের ফরেনসিক টিম সেখানে গিয়েছিল। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। এ ব্যাপারে বলার মতো এখনও আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
আপনারা কাউকে আটক করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির প্রধান বলেন, আপাতত আমরা কাউকে আটক করিনি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।
কীভাবে ঘটনাটি ঘটল, তার কোনো কারণ জানা গেল কী, এমন প্রশ্নে অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধান শুরু করেছি। এখনই কোনো কারণ বলতে পারব না। পরবর্তীতে হয়তো কারণ জানাতে পারব।’